বিধবা নারী অপয়া কিংবা সমাজের বোঝা নয়। তাদের আছে সুন্দর জীবন ধারণের অধিকার। বিয়ের অধিকার পাওয়া সত্ত্বেও যদি দ্বিতীয়বার স্বামী গ্রহণ না করে সন্তান লালন-পালন করে, তাহলে তার সম্মান ও মর্যাদা অনেক বেশি। দুঃখে-কষ্টে পালিত সন্তান প্রতিষ্ঠিত হলে দিনশেষে দুনিয়াতে সে সম্মানিতা বলে গণ্য হয়। আর পরকালীন সুসংবাদ তো আছেই। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি এবং কষ্ট ও মেহনতের কারণে বিবর্ণ হয়ে যাওয়া বিধবা কেয়ামতের দিন এরূপ থাকব।’
এসময় তিনি তার সাদা দাঁত ও মধ্যমা আঙুলের প্রতি ইশারা করেন। বলেন, ‘এরা ওইসব নারী, যারা তাদের স্বামীর মৃত্যুর পর স্বীয় বংশমর্যাদা ও রূপ-লাবণ্য থাকা সত্ত্বেও যতদিন না তার সন্তানরা বড় হয় বা সে মারা যায়, ততদিন (অন্য কোথাও বিয়ে না করে) তার এতিম (স্বামীর) সন্তানদের প্রতিপালনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে।’ (সুনানে আবি দাউদ : ৫০৫৯)। এতিম সন্তান লালন-পালনের কারণে বিধবা নারী জান্নাতে প্রবেশের অগ্রাধিকার লাভ করবে।
রাসুল (সা.) আরো বলেন, ‘আমি ওই ব্যক্তি, যার জন্য সর্বপ্রথম জান্নাতের দরজা খোলা হবে। কিন্তু এক নারী এসে আমার আগে জান্নাতে যেতে চাইবে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করব, তোমার কী হলো? তুমি কে? তখন সে বলবে, আমি ওই নারী, যে নিজের এতিম সন্তানদের লালন-পালনের জন্য নিজেকে (বিয়ে করা থেকে) আটকে রেখেছি।’ (মুসনাদে আবি ইয়ালা : ৬৬৫১)।
বিধবা নারীকে সাহায্য-সহযোগিতা করা রাসুল (সা.)-এর অন্যতম সুন্নত। তিনি বিধবা নারীর প্রতি সামাজিক অবহেলার পথ রুদ্ধ করতে একাধিক বিধবা নারীকে বিয়ে করেছেন। উম্মতকে শিখিয়েছেন- বিধবাদের প্রতি হেলা করা উচিত নয়।
মহানবী (সা.) সর্বদা বিধবাদের প্রতি সদয় ছিলেন। রাসুল (সা.) কোনো বিধবা ও অভাবীর সঙ্গে পথ চললে তাদের প্রয়োজন পূরণ করতেন। (সুনানে নাসায়ি : ১৪২৫)। তিনি বিধবা নারীদের সহযোগিতাকারীর জন্য বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘বিধবা ও মিসকিনদের জন্য (খাদ্য জোগাতে) সচেষ্ট ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মতো বা রাত জেগে ইবাদতকারী ও দিনভর রোজা পালনকারীর মতো।’ (বোখারি : ৪৯৬২)।