আমি সবাইকে বলি তাহাজ্জদ নামাজ পড়তে। আর তাহাজ্জদ নামাজের পর কিছু সময় মোরাকাবা বা ধ্যানে বসতে। ঐ সময় ধ্যান করতে হবে কেবল খোদাকে। চেষ্টা করুন। যখনি আমরা নামাজ পড়ি, তখনই দুনিয়ার সমস্ত চিন্তায় আমাদের ঘিরে। কিন্তু রাত্রিতে যখন সমস্ত প্রকৃতি নিস্তব্ধ থাকে, সন্তানাদি ঘুমিয়ে থাকে, সেই সময় সুযোগ সহজতর হয়, খোদার দিকে সমস্ত চিন্তাশক্তিকে নিয়োজিত করা।
খোদা আমাদের দেহ ভঙ্গি দেখেন না, তিনি দেখেন আমাদের অন্তর। অন্তরটি কোথায় আছে, কি চায়, আর সেই অন্তরের মধ্যে যদি দুনিয়াবী চিন্তা আসে, খোদা সেখান থেকে দূরে সরে যায়। খোদা চান না যে তাঁর সঙ্গে তাঁর আসনে দুনিয়াবী বস্তু স্থান পাক। তাই বাবা সকল, একটু চেষ্টা করুন, সমস্ত অন্তরটিকে দিয়ে প্রেমময়কে চিন্তা করুন। দেখুন কি পান। একদিনে না হোক, দু’দিনে না হোক, তিন দিনে না হোক একসময় পাবেন যদি আপনি চরিত্রবান হন। যদি আপনার নফস দমন থাকে। আর যদি নফস দমন না থাকে, হাজার এলেম হাছেল করুন, কিছুতেই খোদার সংস্পর্শে আসতে পারবেন না। খোদার অনুগ্রহের উপলব্ধি কখনো করতে পারবেন না।
অনেকে বলেন, যে আমি চেষ্টা করি। নামাজ পড়ার সময় চেষ্টা করি; কিন্তু মন আমার অন্যদিকে যায়। তাই তাঁদের বলি যখন পাখী শিকার করেন, তোমার মন কোন দিকে থাকে। পাখীর সঙ্গে আর তোমার বন্দুকের মাছির সঙ্গে যদি সমান সুত্রপাত হয়, তখনই পাখী ঢলে পড়ে যায়। তো সমস্ত চিন্তাকে দূর করে তোমার শিকারের দিকে যদি খেয়াল থাকে আর তাহতে শিকার তখনি পড়ে যায়। আর তা যদি না হয়, অন্যদিকে খেয়াল থাকে কখনো শিকার পড়ে না। তো যখন পাখি শিকার করতে পারো, খোদাকে শিকার করতে পারো না? এ ছেলে খেলা! একটু চেষ্টা করো। কিন্তু ঐ যে বলছি, আমাদের অন্তরায় হচ্ছে পশুত্ব। প্রত্যেকের মধ্যে পশুত্ব আছে। প্রত্যেকের মধ্যে ঋষিত্ব আছে। প্রত্যেকের মধ্যে শয়তানী খেয়ালত আছে। আবার প্রত্যেকের মধ্যে খোদার রূহ, রূহের অংশ আছে। খোদার শক্তি আছে।
যতই চেষ্টা করবেন পশুত্বকে দমন করতে, নফসকে দমন করতে ততই রূহানী শক্তির বৃদ্ধি হবে। আর যতই রূহানী শক্তির বৃদ্ধি হবে ততই খোদার রহমত নানাভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন। তখন জীবন সার্থক হবে। এই দুনিয়ার ভিতরে মানুষ খোদাকে নিজের নিজস্ব করে নিতে পারে। এত দয়া খোদাওয়ান্দ করীম বান্দাকে দিয়েছেন।
বি. দ্র : লেখকের বানান হুবহু রাখা হয়েছে