সম্প্রতি মিয়ানমারে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। বাহরাইন, মিয়ানমার ও তুর্কমেনিস্তানকে হারিয়ে প্রথমবার এশিয়া কাপের মূল মঞ্চে পা রেখেছে লাল সবুজের কন্যারা। এতে মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বহু গুণ। মেয়েদের কথাবার্তাও এখন বেশ পরিণত। জড়তা অনেকটাই কেটে গেছে। ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের পাশে বসা আফঈদা খন্দকারকে এমনটাই মনে হল। দিনে দিনে যেন আরও সাবলীল হচ্ছেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক। দলকে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে তোলার পর আফঈদাদের চোখ অস্ট্রেলিয়ায়। তার আগে অবশ্য আফঈদার চোখ সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপায়। যা শুরু হবে শুক্রবার কিংস অ্যারেনায়। এবারের সাফে অংশ নিচ্ছে না অন্যতম ফেবারিট ভারত। ভারতীয় অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ না করার পেছনে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কারণ জানায়নি। মাত্র চারদল নিয়ে হবে এবারের নারী সাফ। অংশ নেবে নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও স্বাগতিক বাংলাদেশ। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে হবে খেলা। সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দলটি হবে চ্যাম্পিয়ন। ১১ জুলাই উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার।
সিনিয়রদের দলের অধিনায়ক হলেও শুধু বয়সের সীমারেখায় এখনও আফঈদা খেলতে পারেন অনায়াসে জাতীয় অনূর্ধ্ব-২০ দলে। এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক স্বাভাবিকভাবেই দক্ষিণ এশিয়ার বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টের শিরোপাও নিজেদের কাছে রাখতে চাইছেন। বুধবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আফঈদার কথা, ‘এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার করার পর আমরা যদিও এই দলের সঙ্গে অনুশীলন করার বেশি সময় পাইনি। যে কদিন অনুশীলন করেছি কোচ আমাদের যেভাবে বলেছেন সেভাবে অনুশীলনের চেষ্টা করেছি। ২০২৩ সালে এই টুর্নামেন্টে আমরা চ্যাম্পিয়ন। এখানে ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা কাউকে ছোট করে দেখার উপায় নেই। ওরাও ভালো খেলে। তবে আমরাও ম্যাচ বাই ম্যাচ জিতে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পেতে। যেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারি আমরাই।’
মিয়ানমারে সর্বশেষ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের দল থেকে বয়সভিত্তিক দলে সুযোগ পেয়েছেন ৮ ফুটবলার- আফঈদা খন্দকার, মোসাম্মৎ সাগরিকা, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রানী, স্বর্ণা রানী মন্ডল, জয়নব বিবি রিতা, মিলি আক্তার ও উমহেলা মারমা। নতুন কিছু প্রতিভাবান ফুটবলার রয়েছে বর্তমান অনূর্ধ্ব-২০ দলে। এদের মধ্যে নবিরন খাতুন, সুরমা জান্নাত, কানন রানী বাহাদুর, অয়ন্ত বালা মাহাতো, পূজা দাস আলাদাভাবে নজর কাড়তে পারেন। প্রথমবারের মতো বয়সভিত্তিক দলের দায়িত্বে কোচ পিটার বাটলার। এই টুর্নামেন্ট নিয়েও দারুণ আশাবাদী তিনি, ‘এই মেয়েরা সবাই দায়িত্ববান। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে দুর্দান্ত খেলেছে। তাদেরই বেশিরভাগ এখানে খেলবে। ৭ জন ফুটবলার এই দলে খেলার যোগ্য। মেয়েরা প্রস্তুত। গত কিছু দিন ওরা দারুণ অনুশীলন করেছেন। আশা করি এখানেও আমরা ভালো কিছুই উপহার দিব।’ আফঈদা, সাগরিকাদের ওপর দারুণ আস্থা রয়েছে পিটার বাটলারের। তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়েদের ফুটবল খেলার ধরণ সত্যি প্রচুর লোকের বিস্মিত করেছে। এদের ওপর আমার গভীর আস্থা রয়েছে, যেটা এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সফল হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’
