ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চৌদ্দগ্রাম সরকারি কলেজ

অনুমোদনের পাঁচ বছরেও চালু হয়নি অনার্স কোর্স

অনুমোদনের পাঁচ বছরেও চালু হয়নি অনার্স কোর্স

অনুমোদনের ৫ বছর পরও অনার্স কোর্স চালু হয়নি চৌদ্দগ্রাম সরকারি কলেজে। শিক্ষক সংকটে বিঘ্ন ঘটছে নিয়মিত পাঠদানে। রয়েছে অ্যাকাডেমিক সংকট। বাধ্য হয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা চলে যাচ্ছেন অন্যান্য জেলা শহর ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ১৯৮৭ সালের ১৬ জুলাই সরকারীকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত হয়নি ছাত্রাবাস, চালু হয়নি পরিবহণ ব্যবস্থা। রয়েছে কর্মচারী সংকট। ঝাড়ুদার না থাকায় অপরিচ্ছন্ন কলেজ প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন সংকটে কমছে শিক্ষার্থী।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজার ও উপজেলা পরিষদের মাঝামাঝি অবস্থিত চৌদ্দগ্রাম সরকারি কলেজ। ১টি অ্যাকাডেমিক ভবন, ১টি প্রশাসনিক ভবন, পরিত্যক্ত ১টি ভবন ও ১টি মসজিদ নিয়ে এই কলেজ। কলেজের প্রশাসনিক ভবনের ৩য় তলায় শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ১০ হাজার বই নিয়ে একটি বড় পাঠাগার। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতকে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখায় পাঠদান করা হয়। উচ্চমাধ্যমিকে আসনসংখ্যা ১১৭৫, স্নাতকে ৩০০। তারমধ্যে চলতি শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছে ৯২৬ জন ও স্নাতকে ১৫৬ জন। গত সেশনে উচ্চমাধ্যমিকে পাসের হার ৬৮ পার্সেন্ট ও স্নাতকে শতভাগ। তবে প্রয়োজনীয় শিক্ষকের অভাবে উচ্চ মাধ্যমিকে ফলাফল সন্তোষজনক নয়।

২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সরকারি কলেজ শাখা-৪-এর উপসচিব মুর্শিদা শারমিন এক চিঠির মাধ্যমে কলেজে বাংলা, ইংরেজি, রাষ্ট্র বিজ্ঞান, সমাজকল্যাণ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিসাব বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনাসহ সাতটি বিষয়ে অনার্স কোর্সের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু বিগত আওয়ামী সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভোকেশনাল ও কারিগরি শিক্ষাকে উৎসাহিত ও অনার্স কোর্সকে নিরুৎসাহিত করার নীতিতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরও অনার্স কোর্স চালুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাড়পত্র মেলেনি।

একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিদুল ইসলাম লিমন বলেন, আমাদের বিভাগে কোনো শিক্ষক অসুস্থ হলে অথবা প্রশিক্ষণ কিংবা ছুটিতে গেলে পাঠদান ব্যাহত হয়। তখন অন্যত্র থেকে শিক্ষক এনে ক্লাস করানো হয়।

কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, শিক্ষক সংকটে খণ্ডকালীন শিক্ষক এনে চলে পাঠদান। শিক্ষক পদ থাকলেও সমাজকল্যাণ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলামের ইতিহাসে নেই সহকারী শিক্ষক। শিক্ষকদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে, মাতৃত্বকালীন ছুটিতে গেলে অথবা প্রশিক্ষণে গেলে বন্ধ হয়ে যায় পাঠদান। তখন ধারে শিক্ষক এনে চালাতে হয়। একই সমস্যা হয় বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ, রসায়ন, জীব বিজ্ঞান ও গণিতে। এই বিষয়গুলোতে নেই সহকারী শিক্ষক পদ। ৩৫ শিক্ষক পদের মধ্যে এখন পর্যন্ত আইসিটি শিক্ষকের মুখ দেখেনি এই কলেজ।

২০২১ সালে যোগদান করা অধ্যক্ষ শিব প্রসাদ দাশ গুপ্ত জানান, সাতটি বিষয়ে অনার্স কোর্স অনুমোদনের পরও বিগত সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের কারণে শুরু হয়নি। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। অনার্স কোর্স চালু না হওয়ায় স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কুমিল্লা, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্য শহরমুখী হতে হয়। যদি অনার্স কোর্স চালু করা হয় তাহলে এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য উচ্চ শিক্ষা অর্জন সহজ হবে। কলেজে অ্যাকাডেমিক ভবন সংকট রয়েছে। তবে নির্মাণাধীন ছয়তলা বিজ্ঞান সম্প্রসারণ ভবনের কাজ শেষ হলে অ্যাকাডেমিক ভবনের সমস্যা কিছুটা দূর হবে।

এছাড়া বিজ্ঞান বিভাগে ৪টি নতুন পদ সৃষ্টি ও শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দিলে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পাঠদান সহজতর হবে। এবং প্রশাসনিক ভবনের পাশের পরিত্যক্ত ভবনের জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণ হলে অ্যাকাডেমিক ভবনের সমস্যা থাকবেনা বলে জানান তিনি।

চৌদ্দগ্রাম সরকারি কলেজ,অনার্স,কোর্স
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত