৩ দফা দাবি আদায়ে সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার ছিল ওই কর্মসূচি পালনের তৃতীয় দিন। কিন্তু এদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দুই ধরনের চিত্র দেখা গেছে। কোথাও চলছে পাঠদান; আবার কোথাও চলছে সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পাঠানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষগুলোয় পাঠদান চলছে। শিক্ষকেরা নিয়মিতভাবে ক্লাসও নিচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই উপস্থিত রয়েছে শিক্ষার্থীরাও। তারা মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করছেন। অন্যদিকে গোমস্তাপুর উপজেলার পশ্চিম আনারপুর সরকারি বিদ্যালয়ের চিত্র অন্যরকম। সেখানে শিক্ষকরা অফিসকক্ষে বসে কাজ করছিলেন। কিছু শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এলেও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ না। শিক্ষার্থীদের কেউ লিখছে, কেউ গল্প করছে। প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকেরা মাঝেমধ্যে শ্রেণিকক্ষে উঁকি দিচ্ছেন।
বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক রুহুল আমীন বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের দেয়া ৩ দফা দাবিতে আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলার সহকারী শিক্ষকরা তৃতীয় দিনের কর্মবিরতি পালন করছি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমরা বৈষম্যের শিকার ও বিভিন্ন ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই অত্যন্ত যৌক্তিক ৩টি দাবিতে আমরা সমর্থন দিয়েছি। আমাদের সহকর্মীরা ইতোমধ্যে প্রত্যেকটি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা কর্মবিরতিতে থাকলেও শিশুদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখা ও সহশিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছি, কিন্তু প্রকৃত অর্থে শ্রেণি পাঠদান থেকে বিরত রয়েছি। আমরা আশা করবো আমাদের দাবিগুলো মেনে নিবে সরকার।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ১০ম গ্রেডে বেতন দাবি করে আসছিলেন তারা। তবে এখন তাদের আপসহীন অবস্থান অন্তত ১১তম গ্রেডে বেতন দিয়ে শুরু করতে হবে। একই সঙ্গে চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেয়ার জটিলতা দূর করা এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও রয়েছে তাদের দাবির তালিকায়। দাবি পূরণ না হওয়ায় ২৬ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে রয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেছের আলী বলেন, সহকারী শিক্ষকরা তাদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে মে মাসের শুরু থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। এখন তাদের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ণদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি চলমান রয়েছে। তবে জেলার সব বিদ্যালয়ে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে না। কতগুলো বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলছে তাও আমার জানা নেই।