ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

টেকসই বেড়িবাঁধ নেই, উখিয়ার ১০ গ্রামের মানুষের রাত কাটে আতঙ্কে

টেকসই বেড়িবাঁধ নেই, উখিয়ার ১০ গ্রামের মানুষের রাত কাটে আতঙ্কে

টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে বর্ষায় নির্ঘুম রাত কাটে উখিয়ার রেজুখালের দুই পাড়ের ১০ হাজার মানুষের। প্রতিবছর খালের দুকূল উপচে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, খালের ভাঙনে ভিটে-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে অনেক পরিবার। চলতি বর্ষায় এরই মধ্যে ৮-১০টি পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে অন্যত্রে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে।

সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এক দশক ধরে ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকেই জমি কিনে বসতি গড়েছেন বিভিন্ন এলাকায় বা সংরক্ষিত পাহাড়ে। এবারের বর্ষায় উপজেলার হলদিয়া পালংয়ের মনির মার্কেটসংলগ্ন এলাকা বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া কোর্টবাজার-সোনারপাড়া সৈকত সড়কটিও ভাঙনের মুখে পড়েছে। এতে ব্যস্ততম সড়কটি বিলীন হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বর্ষাকালে ভাঙন শুরু হয় রেজুখালের দুই পাড়ে। ভাঙতে ভাঙতে খালে বিলীন হয়ে অদৃশ্য হয়ে যায় ঘর-বাড়িও। বর্ষায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার বদলে রাত কাটে নির্ঘুম এবং আতঙ্কে। গত বর্ষায়ও একই দৃশ্য দেখা যায়। যার ফলে এবার টেকসই বেড়িবাঁধ না দিলে বসতবাড়ি ও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি খালগর্ভে বিলীন হয়ে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করছে অন্তত ১০টি গ্রামের হাজারো মানুষ।

মনির মার্কেট এলাকার গৃহিণী বুলবুলি আক্তার বলেন,"বর্ষাকালে খালের পানির প্রবল স্রোতে আমাদের বসতবাড়ি ভাঙতে ভাঙতে কোনোমতে থাকার মতো ছোট্ট বসতভিটায় রূপ নিয়েছে। বর্ষাকালে খালের পানির উপর থাকে আমাদের রান্নাঘরের চুলো। কাটে নির্ঘুম রাত।

একই এলাকার জাহেদা বেগমের ভিটেবাড়ি কয়েকবছর আগেই খালে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রাত কাটান তিনি। তার পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস একটি কুলিং কর্ণার। সড়কের পাশে খালের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিও এখন খালে পরিণত হয়ে গেছে।"

চরপাড়া এলাকার জহির আহমদ, আহমদ কবির, বাজারপাড়া এলাকার ইসমাইল, আবু বক্কর, মানু, আবুল মনছুর, ভুলু, মাহমুদুল হকসহ অনেকের পরিবারের এরই মধ্যে খালে বিলীন হয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে হাজার হাজার মানুষকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। গত রোববার স্থানীয় বাসিন্দারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের কাছে একটি আবেদন পাঠানো হয়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নূরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেড়িবাঁধ,উখিয়া,আতঙ্ক
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত