ঢাকা শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দেশকে বিপদমুক্ত করতে হলে নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী: সিপিবি সভাপতি

দেশকে বিপদমুক্ত করতে হলে নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী: সিপিবি সভাপতি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলাম বলেছেন, দেশকে বিপদমুক্ত করতে হলে আর দেশের মানুষকে ভীতিমুক্ত করতে হলে নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী। জাতি দ্রুত দেশে জাতীয় নির্বাচন চায়।

তিনি বলেন, এটা না হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে না। জানমালের নিরাপত্তা আসবে না। অর্থনীতিতে বিনিয়োগ হবে না। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলতে থাকবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়বে। যা এখনই আমরা দেখতে পাচ্ছি।

শনিবার (২১ জুন) বিকেলে কিশোরগঞ্জে জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

শহরের একরামপুরে একটি কনভেনশন সেন্টারে বামপন্থী এ রাজনৈতিক দলটির জেলা শাখার সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিন শতাধিক পার্টি সদস্য অংশ নেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "তারেক জিয়ার সঙ্গে লন্ডন বৈঠকের পর বিএনপির সুর কিছুটা বদলেছে, তারা বলছে সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে চায়-এতে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু এই তারিখ নিয়েও সরকার ‘ইফ’ এবং ‘বাটস’ দিয়ে রেখেছে। খোলাসা করে এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি। আমরা মনে করে এই গিভ অ্যান্ড টেকের লন্ডন মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েও সংকট দেখা দেবে।"

সিপিবি সভাপতি শাহ আলম আরো বলেন, "আমরা মনে করি এ উপদেষ্টা সরকারের একটাই দায়িত্ব। সেটা হলো নির্বাচন দেওয়া। ন্যূনতম নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার সংস্কার দিয়ে অবিলম্বে নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু তারা টার্নিমাল-বন্দর-করিডোরের মতো সংবেদনশীল এজেন্ডা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের এজেন্ডা দেখে সন্দেহ বাড়ছে। নতুন নতুন এজেন্ডা নিয়ে আসছে তারা। এগুলো চলতে থাকলে দেশের সার্বভৌমত্ব শেষ হয়ে যাবে। দেশটাও শেষ করে দেবে। আর আমাদের কাঙ্ক্ষিত নির্বাচনটাও হবে না। এসব নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।"

জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "অনেকে বলছে, এটি বিপ্লব, দ্বিতীয় স্বাধীনতা। যে যেভাবে পারছে নানা বিশ্লেষণ করছে, বিভিন্ন নামে ডাকছেন। আমরা মনে করি এটি বিপ্লবও না, দ্বিতীয় স্বাধীনতাও না। এটি স্বৈরাচারবিরোধী একটা লড়াই হয়েছে। যার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গণতন্ত্রবিরোধী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশে যে স্বৈরাচারী সরকার ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছিল, ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সেই লুটপাট,গুম, খুন, হামলা, মামলা, দুর্নীতি, গণতন্ত্রহীনতার বিরুদ্ধে লড়াই করে একটি নতুন সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তৈরি করেছে-কেবল নির্বাচনের মাধ্যমেই সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন সম্ভব।"

বর্তমান ইউনূস সরাকারের মূল্যায়ন বিষয়ে আরেকটি প্রশ্নের জবাবে সিপিবি সভাপতি বলেন, "তারা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। মবসন্ত্রাস চলছে। শুধু চলছে না এগুলো চালাতে দেওয়া হচ্ছে। সরকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখছে না। এসব কারণে দেশে বিনিয়োগ আসছে না। বারবার নানা বিষয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি করছে। মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করছে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়া হচ্ছে। যা কোনোভাবে কাম্য নয়।"

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে সিপিবি সভাপতি বলেন, "আওয়ামী লীগের যারা অপরাধী তাদের বিচার হওয়া উচিত। যারা এইসব অপরাধে জড়িত, তাদের ন্যায়সংগত বিচার করা দরকার। তবে দল নিষিদ্ধের পক্ষে আমরা নই। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতকেও নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। কিন্তু তাদেরকে তো সরকার নানাভাবে সুযোগ ও অগ্রাধিকার দিচ্ছে। যা সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করছে।"

এর আগে জেলা সিপিবির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা সিপিবির সভাপতি আবদুর রহমান রুমী। বক্তব্য দেন জেলা সিপিবি নেতা, জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি এনামুল হক ইদ্রিস, জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ সরকার, সিপিবি নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এনামুল হক, আবুল হাশেম, মোস্তফা কামাল নান্দু, সেলিম উদ্দিন খান, ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।

নির্বাচন,সিপিবি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত