ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রংপুর অঞ্চলে আমনের বাম্পার ফলনে আশাবাদী কৃষক

রংপুর অঞ্চলে আমনের বাম্পার ফলনে আশাবাদী কৃষক

কৃষি প্রণোদনার কারণে চলতি আমন মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠ এখন সবুজে ভরে উঠেছে। বাতাসে ঢেউ খেলছে ধানের সবুজ পাতা। এ দৃশ্য দেখে কৃষকের মনে জেগেছে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, নিবিড় পরিচর্যা এবং সময়মতো সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এবার ফলনের ব্যাপারে আশাবাদী কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এবার ৬ লাখ ২০ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রংপুরে ১ লাখ ২৬ হাজার হেক্টর, গাইবান্ধায় ১ লাখ ২০ হাজার ১২০ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ২ লাখ ২৬ হাজার ৫০০ হেক্টর, লালমনিরহাটে ৮৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর ও নীলফামারীতে ১ লাখ ১৩ হাজার ২২০ হেক্টর। স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে এবারের চাষাবাদ আগের বছরের তুলনায় আরও ভালো হয়েছে। অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি ধান কাটা শুরু হবে।

আগস্ট মাস জুড়ে অনাবৃষ্টির কারণে শুরুতে ধান রোপণে কৃষকরা বিপাকে পড়লেও শেষদিকে সেচের ওপর নির্ভর করে আবাদ করেছেন। এতে বাড়তি খরচ হলেও কৃষি বিভাগ বলছে, ফলন ভালো হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের কৃষক কচি মুদ্দিন বলেন, ‘বৃষ্টি নেই, আছে শুধু রোদ, ঘাম আর বাড়তি খরচের বোঝা। শ্যালো পাম্পে পানি তুলে আমন রোপণ ও ধানের চারা বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর রংপুর জেলায় ২৭ হাজার কৃষককে কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। প্রতি কৃষককে ৫ কেজি বীজ ধান, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ‘আগস্টের শেষের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় রোপণ শুরু হয়েছে। ফলন ভালো করতে সেচ দিয়ে যথাসময়ে রোপণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-আগস্ট মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪৬৪ মিলিমিটার হলেও এবার হয়েছে মাত্র ২০০ মিলিমিটার। ফলে কৃষকদের জমিতে কৃত্রিমভাবে সেচ দিতে হচ্ছে।

বিনা রংপুর কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. রফিকুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবনকালীন ধানের প্রায় ১৭ টন বীজ কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ৬ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন। তিনি বলেন, স্বল্প জীবনকালের জাত চাষের ফলে আমন ফসল তোলার পর রবি শস্য আবাদ করা যাবে, যা ফসলের নিবিড়তা বাড়াবে।

সবশেষে, রংপুর অঞ্চলের কৃষকেরা মনে করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারের মৌসুমে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন পূরণ হবে।

আশাবাদী কৃষক,আমনের বাম্পার ফলন,রংপুর অঞ্চল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত