
সকল বাধা-আপত্তি কাটিয়ে অবশেষে আগামীকাল থেকে দুইদিনের জন্য অনুমতি পেলে মাদারীপুরের কালকিনির ভুরঘাটা ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ি মেলা। গতকাল রোববার (১৯ অক্টোবর) দুইদিনের জন্য মেলার অনুমতি দেন জেলা প্রশাসক মোছা ইয়াসমিন আক্তার।
প্রতিবছর মেলা ৫ দিন হলেও এবার দুইদিন হবে কুন্ডুবাড়ি মেলা। গতবছর মেলা অনুষ্ঠিত হয় তিনদিন। এর আগে কখনও দুইদিনের মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানা গেছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর মেলায় অশ্লীলতা, চাঁদাবাজি, মাদক, জুয়া সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে। গত ১৬ অক্টোবর কালকিনির ভুরঘাটা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মেলা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেন আলেম সমাজ। পরে এটি নিয়ে উপজেলা ও জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়।
শেষমেষ কমিটির আবেদনের পেক্ষিতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়। এবছর মেলা আগামী ২১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ১৫টি বিধিনিষেধ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—আসামাজিক কর্মকান্ড বন্ধ, জুয়া-মাদক নিষেধ, উচ্চস্বরে শব্দযন্ত্র পরিহার, অবৈধ পণ্য ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উপর দোকানপাট বসানো যাবে না, রাত ১১টার পর মেলায় দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ ও উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিহার। জেলা প্রশাসন এসব নির্দেশনা দিয়েছে।
কালকিনির ভুরঘাটা কুন্ডুবাড়ি কালি মন্দিরের সিনিয়র সহ-সভাপতি স্বপন কুমার কুন্ডু জানান, জেলা প্রশাসনের কাছে মেলার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। পরে প্রশাসন নানান দিক বিবেচনা করে দুইদিনের অনুমতি দিয়েছেন। এক সময়ে মেলা ৫–৭ দিন অনুষ্ঠিত হতো। মেলার সময়সীমা বাড়ানো হলে ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপকার হয়।
এই পুরনো মেলাকে ঘিরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও স্থানীয়রা বেশ সহযোগিতা করেন। সবকিছু মিলিয়ে প্রতিবছর কুন্ডুবাড়ি মেলা মিলন মেলায় পরিণত হয়।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সাইফ উল আরেফিন জানান, মেলা বন্ধ নিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেসব অভিযোগে মেলা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছিল, সেইসব কর্মকাণ্ড মেলায় কখনও করতে দেয়া হবে না।
মেলা ও মন্দির কমিটি, সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মেলা সুন্দরভাবে পরিচালিত হবে।