অনলাইন সংস্করণ
১২:১০, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আজ (মঙ্গলবার) তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেবেন মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীর। তিনি এ মামলায় ৫৪তম ও শেষ সাক্ষী।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ জবানবন্দি দেবেন তিনি। ট্রাইব্যুনালে অন্য সদস্যরা হলেন– বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে, সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দিনের জবানবন্দি পেশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর। তিনি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনামসহ বিভিন্ন পত্রিকা কাটিং উস্থাপন করেন। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুম, খুন হত্যা ও নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে ঢাকার ভেতরে ৯৫ জাজার গুলিসহ দেশজুড়ে তিন লাখেরও বেশি গুলি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জব্দ তালিকার তথ্য জবানবন্দিতে উপস্থাপন করেন।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের ৫৪তম সাক্ষী ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বিপিএম এ মামলার সর্বশেষ সাক্ষী।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে, এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরে এই মামলার রাজসাক্ষী হয়ে সাক্ষ্য দেন সাবেক এই পুলিশ প্রধান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় গত ৩ আগস্ট। এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের জবানবন্দি ও জেরা হয়। এখন পর্যন্ত মোট ৪৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে ট্রাইব্যুনাল।
সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ উত্থাপন করেছে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রটি মোট ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার, যার মধ্যে ২,০১৮ পৃষ্ঠা তথ্যসূত্র, ৪,০০৫ পৃষ্ঠা জব্দ তালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি এবং ২,৭২৪ পৃষ্ঠা শহীদদের তালিকার বিবরণ রয়েছে। এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন মোট ৮১ জন। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চূড়ান্ত প্রতিবেদন চিফ প্রসিকিউটরের দপ্তরে জমা দেয়।