
চব্বিশের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আগামী ১৩ নভেম্বর রায়ের দিন ধার্য করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১২টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ তারিখ ঘোষণা করেন।
এদিন, এ মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে যুক্তি খণ্ডন শেষে সমাপনী বক্তব্য দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে, গতকাল বুধবার বিকেলে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এ মামলায় পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) এবং উপস্থিত রাজসাক্ষী (আসামি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রসিকিউশনের পক্ষে আমরা জবাব দেবো। তবে কিছু অংশ আমরা উপস্থাপন করে জবাব দিয়েছি। চিফ প্রসিকিউটর ও অ্যাটর্নি জেনারেল সমাপনী বক্তব্য রাখবেন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে এ মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীতে এই মামলার রাজসাক্ষী হয়ে সাক্ষ্য দেন সাবেক এই পুলিশ প্রধান।
গত ১৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের চরম দণ্ড (মৃত্যুদণ্ড) চান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। একইসঙ্গে, রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের শাস্তির বিষয় ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দেন তিনি।
অন্যদিকে, টানা পাঁচ দিন প্রসিকিউসন পক্ষে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষে গতকাল বুধবার ট্র্যাইব্যুনাল-১ এ দুই আসামির পক্ষে তিন দিন যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষ করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে এই আইনজীবী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে নির্দোষ দাবি করে তাদের খালাসের আবেদন করেন।