
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)-এর নির্বাচন আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ২৮ সেপ্টেম্বর পুনর্বিন্যস্ত করে তফসিল ঘোষণা করেছে রাকসু'র প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তবে এ দিনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠীর দিন হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় রাকসু কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
রাকসু'র নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করার দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড ম্যাথমেটিক্স বিভাগের উজ্জ্বল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, “অবিলম্বে রাকসু নির্বাচনের এই তারিখ পরিবর্তন করতে হবে, ২৮ তারিখ থেকে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু, আমরা যারা হিন্দু তখন আমরা ক্যাম্পাসে থাকবো না, তাহলে আমাদের ভোটের অধিকার প্রশাসন কেড়ে নিলো বটে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অর্পণ ধর বলেন, "২৮ সেপ্টেম্বর দুর্গা পূজার মহাষষ্ঠীর দিন রাকসু নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার একটা অভিনব কৌশল নিয়েছে তারা।"
মহাষষ্ঠীতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা একটা অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেছেন আইন বিভাগের শেষ বর্ষের হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী সোমা পাল। তিনি বলেন, দুর্গাপুজো হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। এদিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করাটা একদম অযৌক্তিক। এই তারিখে নির্বাচন হলে আমরা কোনোভাবেই থাকতে পারবো না। একদিন আগে হলেও থাকা সম্ভব হতো। প্রশাসন কি তাহলে চায় না হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করুক। এই তারিখে ভোট হলে কখনই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ মহাষষ্ঠীর একদিন আগেই আমরা বাসায় চলে যাই।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রনি দেব সর্মা বলেন, "আমাদের দুর্গাপূজা উৎসব মূলত অষ্টমীতে থেকে শুরু হয়। কিন্তু আমাদের ক্যাম্পাসে ৬ষ্ঠী ও ৭মী'তে বন্ধ নেই তাই আমাদের বাধ্য হয়ে অষ্টমী দিন যেতে হয়। এ দিনে নির্বাচন হলে অনেকে বাড়ি যেতে পারবে না। আর যারা বাড়ি যাবে তারা ভোট দিতে পারবে না।"
রাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, "একমাত্র হিন্দু শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় আমরা পূজার আগে নির্বাচন ডেট দিয়েছি। ২৮ তারিখ পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকবে।"
নির্বাচনের তারিখ আবারও পিছাবে কিনা প্রশ্নে তিনি জানান, "নির্বাচনের তারিখ আর পেছাবেনা আগামী ২৮ তারিখে রাকসু নির্বাচন হবে।"