রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জুলাই ৩৬ হলের ৯১ জন শিক্ষার্থীকে ‘বিনা পারিশ্রমিক যৌনকর্মী’ বলা শাখা ছাত্রদলের শাহ মখ্দুম হলের সহ-সভাপতি মো. আনিছুর রহমান মিলনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী (৩১) বাদী হয়ে রাজশাহী মতিহার থানায় মামলাটি করেন।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মো. আনিছুর রহমান মিলন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের কুরুচিপূর্ণ আচরণের জন্য এ নেতাকে ছাত্রদলের সকল পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করেন শাখা ছাত্রদল।
মামলার এজাহারে বলা হয়, "জুলাই ৩৬ হল"-এর প্রভোস্ট কর্তৃক ৯১ জন শিক্ষার্থীকে অযাচিতভাবে তলব করার প্রতিবাদে গত ২ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈম তুহিনা তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে একটি প্রতিবাদমূলক স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে ১নং বিবাদী মো. আনিছুর রহমান মিলন (২৫), (শাহ মখদুম হলের সহ-সভাপতি) অত্যন্ত অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও নারী অবমাননাকর মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে একাধিকবার মো. আনিছুর রহমান মিলনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, ওই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে করেছেন। ফলে ছাত্রদল সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ ও হল সহ-সভাপতির পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এমন কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর মন্তব্যের মাধ্যমে শুধু নারী নেত্রীকে মানসিকভাবে আঘাত করা হয়নি, বরং সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।"
এসময় ছাত্রদলের সাংগঠনিক আলোচনা শেষে থানায় এজাহার দায়ের করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করে শাখা ছাত্রদল।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় নারীদের অধিকার আদায়ে ও তাদের সম্মানে বদ্ধপরিকর। নারীদের বুলিংয়ের বিষয়ে ছাত্রদল জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। আমাদেরই এক নারী নেত্রীর প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন হল কমিটির এক নেতা। এ নিয়ে তাকে আমরা তার পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করি এবং তার বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে আমি মামলা করি।”
এ বিষয়ে রাজশাহী মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, “ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের কুরুচিপূর্ণ ব্যবহার করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আমাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা অভিযোগটি পর্যালোচনা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।”
