ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিশ্বজিৎ স্মরণে জবি ছাত্রদল ও শিবিরের পৃথক কর্মসূচি

বিশ্বজিৎ স্মরণে জবি ছাত্রদল ও শিবিরের পৃথক কর্মসূচি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় গেটসংলগ্ন শাঁখারীবাজার মোড়ে অবস্থিত ‘বিশ্বজিৎ চত্বরে’ আজ মঙ্গলবার পৃথকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জবি ছাত্রদল এবং জকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের হামলায় নিহত দরজি বিশ্বজিৎ দাসকে স্মরণ করে সংগঠন দুটি বিচারের দাবি জানিয়েছে।

বিকেল পৌনে পাঁচটায় জবি শাখা ছাত্রদল বিশ্বজিৎ চত্বরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এ সময় সংগঠনের নেতারা বলেন, ২০১২ সালের আজকের দিনে ভিন্ন মতাদর্শের কারণে ছাত্রলীগ বিশ্বজিৎ দাসকে হত্যা করে।

জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ও জকসু ছাত্রদল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেলের এজিএস প্রার্থী বিএম আতিকুর রহমান তানজিল বলেন, ‘ভিন্ন মতাদর্শের মনে করে ছাত্রলীগ তাকে হত্যা করে। আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে অনেকের বিচার হয়নি, আমরা এ হত্যার যথাযথ বিচার চাই।’

ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জকসুর একই প্যানেলের জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় একজন সাধারণ মানুষকে ভিন্ন মতাদর্শের কারণে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর যথাযথ বিচার চাই।’

শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান রুমি, সুমন সর্দার এবং জকসুর ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থীরা।

এদিন দুপুর ২টায় একই স্থানে বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের দণ্ড কার্যকর করার দাবিতে মানববন্ধন করে জকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা। মানববন্ধনে শাখা শিবিরের নেতা-কর্মী ছাড়াও বিশ্বজিতের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।

উপস্থিত বক্তারা বলেন, ‘২০১২ সালে শুধু ট্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলে প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত মানুষ, পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনেই বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই ফ্যাসিবাদী ঘটনার বিচার আজও হয়নি।’

এজিএস প্রার্থী মাসুদ রানা বলেন, ‘ছাত্রলীগের মতো সন্ত্রাসী ট্যাগিং অপকর্মকে প্রশ্রয় দেওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। যারা এই অপসংস্কৃতিকে রাজনীতি হিসেবে টিকিয়ে রাখতে চাইছে, তাদেরও বলছি, নিজেদের পালানোর জায়গা আগেই খুঁজে রাখুন।’

জিএস প্রার্থী আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, ‘বিশ্বজিৎকে হত্যার পর ছাত্রলীগের তৎকালীন ২১ জন নেতাকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা গেছে, ঐ ৮ জনের মধ্যে দু’জনকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে এবং চারজনের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে যাবজ্জীবনে নামানো হয়েছে। এমনকি যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্য থেকেও দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।’

শাখা শিবিরের সভাপতি ও ভিপি প্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আজকের দিনটি বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের আগের দিন। শুধু বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছে এই ঢাকা শহরের মানবতাকেও। আমরা এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখি, যেখানে প্রত্যেক মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে।’

এসময় বিশ্বজিতের বড় ভাই উত্তম কুমার দাস বলেন, ‘আমার একটাই দাবি, আজ ১৩ বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু এখনো আমার ভাইয়ের বিচার হয়নি। এই সরকার যেন দ্রুততম সময়ে খুনিদের বিচারের ব্যবস্থা করে, যাতে অন্তত একটু হলেও শান্তি পাই।’

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের অবরোধ চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণের পর ধাওয়া করে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা।

পৃথক কর্মসূচি,জবি ছাত্রদল ও শিবির,বিশ্বজিৎ স্মরণ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত