
মানবসভ্যতার ইতিহাসে শিক্ষার ভূমিকা যত প্রাচীন, ততই মহিমান্বিত। তবে সেই শিক্ষার সর্বোচ্চ রূপ ও উত্তম দৃষ্টান্ত মেলে নবীজি (সা.)-এর জীবনাচরণে। মানবতার শিক্ষক, আলোকবর্তিকা, খোদায়ি জ্ঞানের উৎস তিনি এমন এক শিক্ষানীতি উপহার দিয়েছেন, যা অন্ধকারে নিমজ্জিত ইতিহাসের সবচেয়ে অধম এক জাতিকে আলোর পথে পরিচালিত করেছে।
নবীজি (সা.)-এর চারিত্রিক নৈপুণ্যের অন্যতম উজ্জ্বল দিক ছিল তার শিক্ষার ধরণ। কোমলতা, সহমর্মিতা, মাধুর্য আর প্রজ্ঞাপূর্ণ তার প্রতিটি উপদেশ যেন তপ্ত মরুতে শীতল ঝরনাধারা। প্রাচীন আরবের অশিক্ষিত ও রুক্ষ জাতির মাঝে তিনি রোপণ করেছিলেন চিরস্থায়ী শান্তির বীজ। মূর্খতার অন্ধকার দূর করে প্রজ্বলিত করেছিলেন জ্ঞানের দীপশিখা। তার শিক্ষাপদ্ধতি ছিল সহজ-সরল, প্রাঞ্জল ও হৃদয়গ্রাহী। ভাষায় ছিল না জটিলতার বোঝা; বরং এমন সাবলীলতা ও আন্তরিকতায় ভরপুর ছিল, যা সমাজের প্রতিটি শ্রেণির মানুষকে অনায়াসে স্পর্শ করত।
মরুর শুষ্ক বালুকায় বেড়ে ওঠা মানুষের জন্য এমন উপযোগী শিক্ষক প্রেরণই ছিল আল্লাহর অসীম হেকমত ও রহমতের মহিমাময় নিদর্শন। যুগের পর যুগ হানাহানি আর অন্ধ বিশ্বাসে জর্জরিত জাতিকে কীভাবে জ্ঞানের দীপে আলোকিত করা যায়? কেমন সহনশীল, উদার ও মননশীল মানুষ হলে এক ভয়ংকর বর্বর জাতিকে রূপান্তর করা যায় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতিতে? এর জীবন্ত উত্তর মেলে প্রিয় নবীজি (সা.)-এর শিক্ষকজীবনে।
নবীজি (সা.)-এর এ শিক্ষামূলক দিকটি গভীর অন্তর্দৃষ্টিতে বিশ্লেষণ করেছেন বিশিষ্ট হাদিস বিশারদ, জগদ্বিখ্যাত আলেম, শায়খ আল্লামা আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ (রহ.)। তার অনন্য গ্রন্থটি ইসলামি শিক্ষাদর্শনের এক মহাজাগতিক আলো, যা বিশ্বমানবতার সামনে নববি শিক্ষানীতির সফল দিক উন্মোচিত করে। এ যুগান্তকারী বইটির বাংলা অনুবাদ ‘নবীজির শিক্ষানীতি’। যা অনুবাদ করেছেন সময়ের জনপ্রিয় সব্যসাচী লেখক, দক্ষ অনুবাদক ও প্রাঞ্জল ভাষাশিল্পী মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ। তার হাতের ছোঁয়ায় অনুবাদটি হয়ে উঠেছে সাবলীল, ভাব-গভীর এবং সাহিত্যরসে পূর্ণ।
ভাষার সৌন্দর্য, ভাবের স্বচ্ছতা ও অনুবাদের নৈপুণ্য মিলে বইটিকে দিয়েছে অনন্য গাম্ভীর্য ও আকর্ষণ। ২৫৬ পৃষ্ঠার এ অনবদ্য বইয়ে পাঠক খুঁজে পাবেন শান্তির পরশ, শিক্ষকজীবনের মর্মবাণী এবং মানবগঠনের অমূল্য সব নির্দেশনা। প্রতিটি পৃষ্ঠা যেন আহ্বান জানায়, ‘জ্ঞান হোক মুক্তির পথ, শিক্ষা হোক শান্তির সোপান।’ এবারের আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলায় পাঠকের পছন্দের তালিকায় রয়েছে বইটি। বাংলাবাজারের ইসলামি টাওয়ার ও অনলাইন বুকশপ ‘রকমারি’সহ বইটি পাওয়া যাচ্ছে দেশের সব অভিজাত লাইব্রেরিতে।