
ইসলামি শিক্ষার মাধ্যমে পরিবারে সৃষ্টি হয় পারস্পরিক সম্মান, ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ; আর সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যায়, ইনসাফ ও শান্তি। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনেও ইসলামি শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইসলামি শিক্ষার প্রধান উৎস হলো কোরআন ও হাদিস। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো।‘ (সুরা তাহরিম)। এই আয়াত প্রমাণ করে যে ইসলামি শিক্ষার প্রচলন সর্বপ্রথম পরিবার থেকেই শুরু হওয়া উচিত।
সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই দ্বীনি শিক্ষা দেওয়া গেলে তারা নৈতিকভাবে গঠিত হয়। তারাই পরে জাতির কাছে ইসলাম প্রচার করবে। তাই প্রত্যেক পিতা-মাতার জন্য উচিত হলো, সন্তানকে কোরআন-হাদিসের আলোকে ইসলামি শিক্ষা দেওয়া। পরিবারে ইসলামি শিক্ষাচর্চার মাধ্যমে সন্তানরা সঠিক ও ভুলের পার্থক্য শেখে, বড়দের প্রতি সম্মান ও ছোটদের প্রতি সহানুভূতি গড়ে ওঠে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা প্রত্যেকে একজন দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (বোখারি ও মুসলিম)।
অভিভাবকরা যদি ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত হন এবং তা নিজেদের জীবনে অনুসরণ করেন, তবে সন্তানরাও সহজেই সেই শিক্ষায় বেড়ে উঠবে। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবারবর্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো।’ (সুরা তাহরিম : ৬)। এই আয়াত পরিবারের ওপর দ্বীনি শিক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘হে আমার বৎস, তুমি আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করো না, নিশ্চয়ই শিরক মহা অন্যায়।’ (সুরা লুকমান : ১৩)।
আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আদেশ দেন ন্যায়বিচার, সদাচরণ ও আত্মীয়স্বজনকে তাদের হক প্রদান করতে।’ (সুরা নাহল : ৯০)। তিনি আরও বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব : ২১)। পরিবার ও সমাজে রাসুল (সা.)-এর জীবনী অনুসরণ করাই প্রকৃত ইসলামি শিক্ষা। তিনি আরও বলেছেন, ‘হে বৎস, সালাত কায়েম করো, সৎকাজের আদেশ দাও এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করো।’ (সুরা লুকমান : ১৭)।
এক আদর্শ পিতা কীভাবে সন্তানকে উপদেশ দিচ্ছেন, তা এই আয়াতে স্পষ্ট। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কোনো ভালো কাজের দিকনির্দেশনা দেয়, তার জন্য ওই কাজকারীর সমান সওয়াব রয়েছে।’ (মুসলিম : ১৮৯৩)। ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি, যে তার পরিবার-পরিজনের জন্য উত্তম। আর আমি আমার পরিবারের জন্য তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।’ (তিরমিজি : ৩৮৯৫)।
তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে তার দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে।’ (বোখারি : ৮৯)। ইসলামি শিক্ষা সমাজে ইনসাফ, দয়া, মানবতা, সহযোগিতা ও সহনশীলতা শিক্ষা দেয়। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আদেশ দেন ন্যায়বিচার, সদাচরণ এবং আত্মীয়দের হক।’