অনলাইন সংস্করণ
১৩:০৯, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবারও নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা ছিল ট্রাইব্যুনাল এলাকা।
সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘিরে নিরাপত্তায় রয়েছেন পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানান, দিনভর এভাবেই নিরাপত্তা বজায় থাকবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রবেশপথে দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও সেনা-বিজিবির বিশেষ নিরাপত্তা টিম অবস্থান নিয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন। পথচারী, আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের পরিচয় যাচাই করে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের ভেতর ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কড়া নজরদারি করছে। সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রিত, এবং রায় ঘোষণার পরবর্তী পরিস্থিতি বিবেচনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড দেন। অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একইসঙ্গে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনার মামলার পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল মোট ছয়টি ঘটনা বিবেচনা করেছে। প্রথম অভিযোগের তিনটি ঘটনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার হিসেবে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া, ঢাকায় ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে ফোনালাপের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ফাঁসির নির্দেশ দেওয়া এবং রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা।
দ্বিতীয় অভিযোগের তিনটি ঘটনার মধ্যে রয়েছে ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর ফোনালাপ। ড্রোন ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয়, ছাত্র-জনতাকে হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা নির্দেশ এবং সেই ঘটনার পর আশুলিয়ায় নিহতদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া।
এই অপরাধগুলোর জন্য হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা জুলাইয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। একইসঙ্গে উভয় অভিযোগে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।