অনলাইন সংস্করণ
২১:১৪, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী উন্নয়ন করবে এবং গণতন্ত্রের পথে অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র যাই থাকুক না কেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণের জন্য বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’
সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশে জবাবদিহিতার সকল ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। মানুষকে গুম, খুন ও হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালে লাখো প্রাণের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের দেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা ছিল। তখন থেকে গণতন্ত্রের টুটি চেপে ধরার জন্য ষড়যন্ত্রের জাল তারা বুনেছিল। কখনও তারা সফলও হয়েছিল। যারা স্বৈরাচার ছিল তারা গুম, খুন, মিথ্যা মামলার রাজনীতি শুরু করেছিল। লুটপাটের রাজনীতি শুরু করেছিল, মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি শুরু করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে আমরা দেখেছি আমাদের কতজন রাজপথে রক্ত দিয়েছে। আমরা দেখেছি জুলাই আন্দোলনে কীভাবে নির্বিচারে মানুষ খুন করেছে, নারীদের অত্যাচার করেছে, শিশুরাও সেদিন হেলিকপ্টারের গুলি থেকে রক্ষা পায়নি। কিন্তু পরিশেষে আমরা দেখেছি বিজয় জনগনের হয়েছে। পরাজিত হয়েছে স্বৈরাচার। দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে স্বৈরাচার। দেশের বিভিন্ন স্থরের মানুষের আত্মত্যাগে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে, শিক্ষা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাখাতসহ অনেকখাতে নীতি আদর্শ রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আরও যারা রাজনৈতিক দল আছে তাদেরও নীতি আদর্শ ও পরিকল্পনা আছে। বিভিন্ন দলের বিভিন্ন মতামত থাকতেই পারে। মানুষের এখন প্রত্যাশা দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে হবে। দেশের যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে তা গড়ে তুলতে হবে। কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বেকার সমস্যা দূরীকরণে রাজনীতিক দলগুলোর পরিকল্পনা থাকতে হবে। নারীদের সমস্যা আছে, সে গুলোর দিক নির্দেশনা দিতে হবে আমাদেরকে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনীতিক দল কতগুলো বক্তব্য দিচ্ছে। বক্তব্য দেওয়ার অধিকার সকলের আছে কিন্তু সহকর্মীবৃন্দ বক্তব্য দিতে গিয়ে দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়, স্বৈরাচার ফিরে আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি কোনো অবস্থাতেই ভালো হবে না।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আজ বিএনপির সম্মেলনে গণতান্ত্রিক পক্রিয়ায় নেতৃত্ব বাছাই হয়েছে। দেশর মানুষ প্রত্যাশা করে আমরা রাজনৈতিক দল। প্রত্যেকটি ভিন্ন ভিন্ন রাজনীতিক দলের ভিন্ন মতামত থাকতেই পারে। আজ সম্মেলনে যেমন মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে, আমরা মনে করি রাজনীতিক দলগুলো এভাবে জনগণের মতামত নেবে। জনগণই বাছাই করে নেবে কে আগামী দিনে বাংলাদেশের দায়িত্ব নেবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে যদি আমরা জনগণকে বাইরে রেখে, জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে শুধু নিজেরাই কথা বলতে থাকি তাহলে দেশের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। যা দেশের মানুষ চায় না। জনগণ যাকে চাইবে তারাই দেশকে নেতৃত্ব দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাই, তার রুপরেখা আড়াই বছর আগে ৩১ দফার মাধ্যমে জনগণের কাছে উপস্থাপন করেছি। আসুন জনগণের ওপর যদি আস্থা থাকে, জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে দিন।’
এ সময় তিনি জনগণের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে বিএনপি সমর্থনের আহ্বান জানান। ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু।
এছাড়াও বক্তব্য দেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।