ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পিকস ডিজিজ

নুসরাত সুলতানা
পিকস ডিজিজ

কতটা শব্দহীন হয়েছিলে?

বুকের ভেতর কীকরে ধারণ করেছিলে মহাকালকে?

৪৩-এর পর তোমার আগ্নেয়গিরি চোখগুলো হয়ে উঠেছিল

এক নির্বিকার দর্শক,

ঝঞ্জা বিক্ষুব্ধ বুক হয়ে

উঠেছিল এক শান্ত পোষ্য সরোবর।

অই সাদা ফিরিঙ্গিরা-

যুদ্ধের খাবার যোগাতে মজুদ করেছিল খাদ্য।

আসে ৫০ এর মনান্তর।

না খেতে পেয়ে হাড্ডিসার হয়ে মৃত্যুর কোলে

ঢলে পড়ে ৩০ লাখ ভারত সন্তান।

তুমি রইলে নির্বিকার।

তোমার তো কাঁপিয়ে দেয়ার কথা ছিল

অই বেনিয়াদের ভীত।

তোমার নিষ্ক্রিয়তা কতটা নিশ্চিন্ত করেছিল ওদের!

কতটা স্বস্তি পেয়েছিল ওরা,

জানে শুধু সাদা শৃগাল বেনিয়ার দল।

১৯৪৬ এ কলকাতা দাঙ্গায় নিহত হলো

পাঁচ হাজার ভারত ভাই-বোন।

পিকস ডিজিজ তোমার কলমকে বোবা করে দিল!

তখন তোমার কলমের তো হয়ে ওঠার কথা ছিল

দাঙা বিনাশী তলোয়ার।

’৫২-তে পাক আর্মি বুলেট চালাল-

আমার বর্ণমালার বুকে।

’৭১ এ ওরা ছারখার করল-

আমার সবুজ গ্রাম, রক্তাক্ত করল নদী,

ধর্ষিতা হল আমার গর্ভবতী জননী।

বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করল-

নব্বই বছরের বৃদ্ধকে।

অথচ কী দুর্ভাগ্য নেমে আসল আমাদের-

তুমি লিখতে পারলে না কিছুই।

আমদের চেতনা পেল না যথাযোগ্য আলোর দিশা!

তুমি আর মহাকাল হয়ে উঠলে সহোদর।

কেবলই দেখে গেলে নিষ্ক্রিয় দর্শনার্থী হয়ে।

পিকস ডিজিজ কেড়ে নিল বাঙালি জাতির

রক্তাক্ত, অমর আর অমিয় শ্লোকগাঁথা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত