প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ২৯ নভেম্বর, ২০২৫
স্যামুয়েল ল্যাঙ্গহোর্ন ক্লিমেন্স ছিলেন একজন মার্কিন রম্য লেখক, সাহিত্যিক ও প্রভাষক। অবশ্য এ নামে কেউ তাকে চেনে না। ছদ্মনামটি বললে একনামে চিনবেন সবাই। মার্ক টোয়েইন। এখন নিশ্চয়ই আর অচেনা নয় কারো কাছে! টোয়েইনের রম্যবোধ আর চপলবুদ্ধি ছিল তীক্ষè। জনসমক্ষেও তিনি ছিলেন ভীষণ জনপ্রিয়। তার বৃহস্পতি যখন তুঙ্গে, তখন সম্ভবত সমগ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা। এমনকি মার্কিন গ্রন্থকার উইলিয়াম ফকনার টোয়েইন সম্বন্ধে এ কথা বলতেও বাকি রাখেননি যে, টোয়েইন ছিলেন ‘প্রথম এবং প্রকৃত আমেরিকান লেখক, তার পরের আমরা সবাই তার উত্তরাধিকারী।’ ফকনার তাঁকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘আমেরিকান সাহিত্যের জনক হিসেবে।’
টোয়েইনের বেড়ে ওঠা হ্যানিবাল, মিসৌরীতে। পরবর্তীকালে এ শহর থেকেই টোয়েইন তার বিখ্যাত দুটি উপন্যাস হাকলবেরি ফিন এবং টম সয়্যার রচনার মূল উপাদান খুঁজে নিয়েছিলেন। একজন প্রকাশকের অধীনে কিছুদিন শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার পর তিনি কাজ করেছেন একজন মুদ্রণ সন্নিবেশক হিসেবে এবং প্রবন্ধ রচনা করেছেন তার বড় ভাই ওরিয়নের সংবাদপত্রের জন্য। বড় ভাই ওরিয়নের সাথে নেভাডাতে যোগ দেওয়ার আগে মিসিসিপি নদীতে তিনি কাজ করেছেন নৌকার মাঝি হিসেবেও। ১৮৬৫ সালে তার কৌতুকপূর্ণ গল্প ‘দ্য সেলিব্রেটেড জাম্পিং ফ্রগ অব কালাভেরাস কাউন্টি’ প্রকাশিত হয়। গল্পটি তিনি শুনেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়াতে কিছুদিন খনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সময়। সেই সময়ে হাস্যরসেভরা এ ছোট গল্প তাঁকে এনে দেয় আন্তর্জাতিক খ্যাতি। এমনকি গ্রিক ক্লাসিক হিসেবে অনূদিত হয় তার এ ছোট গল্প। গল্পে কিংবা কথায় তার বুদ্ধিদীপ্ত এবং ব্যাঙ্গাত্মক উপস্থাপণভঙ্গী সমালোচক, পাঠক নির্বিশেষে কুড়িয়েছে সবার অকুণ্ঠ প্রশংসা।
বক্তৃতা ও লেখালেখি থেকে অঢেল অর্থ কামিয়েছেন মার্ক টোয়েইন। কিন্তু তারপরও এক ব্যবসাতে টাকা বিনিয়োগ করে প্রচুর আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন তিনি। এই অনাকাঙ্ক্ষিত আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পাওনাদারদের কাছ থেকে তিনি সুরক্ষিত হওয়ার জন্য নিজেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেউলিয়া ঘোষণা করেন এবং পরে হেনরি হাটলসন রজার্সের সহযোগিতায় আস্তে আস্তে আর্থিক দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন। পুনরায় আর্থিক স্থিতিশীলতা অর্জনের পর টোয়েইন পাওনাদারদের সব দেনা পরিশোধ করেন, যদিও আইনগতভাবে তার ওপর এমন কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না।
পৃথিবীর আকাশে হ্যালির ধূমকেতু আবির্ভাবের ঠিক কিছুদিন পর, ১৮৩৫ সালের ৩০ নভেম্বর, জন্মগ্রহণ করেন টোয়েইন। তার ধারণা ছিল, হ্যালির ধূমকেতুর সঙ্গে সঙ্গেই আবার তিনি চলে যাবেন পৃথিবী ছেড়ে। কাকতালীয় হলেও সত্য, হ্যালির ধূমকেতুর পুনরায় প্রত্যাবর্তনের পরের দিনই সত্যি সত্যিই অন্তিম শ্বাস ফেলেন তিনি, তারিখটি ছিল ১৯১০ সালের ২১ এপ্রিল।
টোয়েইন ছিলেন কেন্টাকির অধিবাসীনী জেন এবং জন্মসূত্রে ভার্জিনিয়ান জন মার্শাল ক্লেমেন্সের সন্তান। তার বাবা মিসৌরীতে বসবাস শুরু করার সময়ে বাবা-মার পরিচয় ঘটে। ১৮২৩ সালে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। টোয়েইন ছিলেন সাত ভাইবোনের মধ্যে ষষ্ঠ। কিন্তু তাঁদের মধ্য থেকে শৈশব অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন মাত্র তিনজন : তার ভাই ওরিয়ন (১৮২৫-১৮৯৭), হেনরি, পরবর্তীকালে যিনি নৌকা বিস্ফোরণে মারা যান (১৮৩৮-১৮৫৮) এবং পামেলা (১৮২৭-১৯০৪)। টোয়েইনের বয়স যখন তিন বছর তখন তার বোন মার্গারেট (১৮৩৩-১৮৩৯) মারা যান, তারও তিন বছর পর মারা যান তার ভাই বেঞ্জামিন (১৮৩২-১৮৪২)। অন্য ভাই প্লেজেন্ট (১৮২৮-১৮২৯) মারা যান মাত্র ছয় মাস বয়সে।
টোয়েইনের বয়স যখন চার বছর, তখন তার বাবা হ্যানিবাল, মিসৌরিতে চলে আসেন বসবাস করার জন্য। হ্যানিবাল মিসৌরি নদীর তীরে গড়ে ওঠা একটি ছোট্ট বন্দরনগরী যেটা পরে টোয়েইনের দুই বিখ্যাত অভিযান গল্প ‘দ্য এডভেঞ্চার অব হাকলবেরি ফিন’ এবং ‘দ্য এডভেঞ্চার অব টম সয়্যার’-এ উল্লিখিত কাল্পনিক শহর সেন্ট পিটার্সবার্গ সৃষ্টির পেছনে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।
মিসিসিপি নদী ছিল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাহীন মার্ক টোয়েইনের আসল স্কুল, সত্যিকারের শ্রেণিকক্ষ। মিসৌরিতে তখন দাসপ্রথা বৈধ ছিল, যা খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পান টোয়েইন। এ পর্যবেক্ষণের নিখুঁত অভিব্যক্তি ঘটে পরবর্তীকালে তার সাহিত্যকর্মে। মিসিসিপির জলের মুখচ্ছবিতে মার্ক টোয়েইন লিখেছেন, ‘এটি ছিল একটা বই’। অন্ধ-অশিক্ষিত মানুষের কাছে যার ভাষা মৃত ও অর্থহীন। কিন্তু মিসিসিপি আমার কাছে একটা খোলা বই।’ মূলত মিসিসিপি নদীই তাঁকে গড়ে তুলেছিল চিরসফল, চিরস্মরণীয়, বরেণ্য এক সুরসিক লেখক আর সত্যিকারের মানুষ হিসেবে।
টোয়েইনের বাবা ছিলেন একজন অ্যাটর্নি ও বিচারক। ১৮৪৭ সালে, টোয়েইনের বয়স যখন ১১, তখন নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার বাবা। এরপর তার সংগ্রামী জীবন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে হ্যানিবাল ত্যাগ করেন টোয়েইন এবং নিউইয়র্ক সিটি, ফিলাডেলফিয়া, সেন্ট লুইস, মিসৌরি এবং সিনসিনাট্টি, অহিওতে প্রকাশক হিসেবে কাজ করেন।
একবার মিসিসিপি নদী ধরে নিউ ওর্লিয়েন্স, লুইজিয়ানা অভিমুখে যাওয়ার সময় এক বাষ্পনৌকার নাবিক টোয়েইনকেও উদ্বুদ্ধ করেন নাবিক হওয়ার জন্য। টোয়েইন তার ‘লাইফ অন দ্য মিসিসিপি’ বইতে একজন নাবিককে বাষ্পনৌকার ক্যাপ্টেনের চেয়ে অধিকতর মর্যাদাপূর্ণ এবং কর্তৃত্ববান বলে বর্ণনা করেছেন। সেই সময়ে একজন নাবিকের চাকরি যথেষ্ঠ মর্যাদাপূর্ণ ছিল যাতে মাসিক বেতন ছিল ২৫০ ডলার। বাষ্পনৌকার একজন নাবিককে নিয়ত পরিবর্তনশীল নদী সম্পর্কে প্রচুর অধ্যয়ন করতে হতো যাতে এর তীরে গড়ে ওঠা শত শত বন্দর এবং কেঠো জমিতে সফলভাবে নোঙর করতে পারে। ১৮৫৯ সালে নাবিক লাইসেন্স পাওয়ার আগে টোয়েইনকে মিসিসিপি নদীর প্রায় দুই হাজার মাইল (৩২০০ কিলোমিটার) দৈর্ঘ্য পর্যন্ত অধ্যয়ন করতে হয়েছিল। এই চাকরির কল্যাণেই তিনি ‘মার্ক টোয়েইন’ ছদ্মনামটি বেছে নেন। তার চাকরির পরিভাষায় ‘মার্ক টোয়েইন’ মানে হচ্ছে ‘বিশালদেহী কোনো মানুষের সুবিস্তৃত নদীর ১২ ফুট গভীরতার জন্য কান্না’।
চাকরির প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময়ে টোয়েইন একই চাকরিতে যোগদানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন তার ছোট ভাই হেনরিকেও। ১৮৫৮ সালের ২১ জুন হেনরি তার কর্মস্থল বাষ্পনৌকাতে কাজ করার সময় বিস্ফোরণে মারা যান। টোয়েইন তার ছোট ভাইয়ের এই মৃত্যুর ঘটনাটিকে বিস্ফোরণ ঘটার একমাস আগে স্বপ্নে দেখেছিলেন বলে নিজের আত্মজীবনীতে উল্লেখ করে গেছেন। এর সূত্র ধরে তিনি পরবর্তীকালে প্যারাসাইকোলজিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। প্যারাসাইকোলজি সোসাইটির শুরুর দিককার সদস্য ছিলেন তিনি। ছোট ভাইয়ের এই হৃদয়বিদারক অনাকাঙ্ক্ষিত প্রস্থানের জন্য সারাজীবন অপরাধবোধে ভুগেছেন টোয়েইন এবং ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য দোষী ভাবতেন নিজেকেই। ১৮৬১ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মিসিসিপি নদী দিয়ে স্থগিত হয়ে যায় সবধরনের যোগাযোগ। এর আগ পর্যন্ত চাকরিতে বহাল ছিলেন টোয়েইন।
গৃহযুদ্ধের শুরুর দিকে টোয়েইন কিছু দিনের জন্য স্থানীয় মৈত্রী ইউনিটে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে। তারপর তিনি তার ভাইয়ের সাথে কাজ করার উদ্দেশে নেভাডা অভিমুখে যান। সেই সময় তার ভাই কেন্দ্রীয় সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীকালে টোয়েইন একটি স্কেচ আঁকেন, যেখানে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে তিনি ও তার বন্ধুর কোম্পানি ছেড়ে আসার আগে দুই সপ্তাহের জন্য মৈত্রী সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন।
লেখক এবং বন্ধু ড্যান ডিক্যুইলের অধীনে কাজ করার সময়ই তিনি ‘মার্ক টোয়েইন’ নামটি ব্যবহার করেন সর্বপ্রথম। ১৮৬৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি ‘লেটার ফ্রম কার্সন-রি : জো গুডম্যান; পার্টি অ্যাট গভ. জনসন’স মিউজিস’ নামের এক রম্য ভ্রমণ কাহিনীতে নিজের নাম স্বাক্ষর করেন ‘মার্ক টোয়েইন’ হিসেবে। এ ছাড়া ‘রাফিং ইট’ লিখতে তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল পশ্চিমে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। ‘দ্য সেলিব্রেটেড জাম্পিং ফ্রগ অব কালাভেরাস কাউন্টি’ লেখার জন্য নানা উপাদানও তিনি খুঁজে নিয়েছিলেন তার এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা থেকে। ১৮৬৪ সালে টোয়েইন সানফ্রান্সিসকো, ক্যালিফোর্নিয়াতে চলে আসেন। তখনো তিনি সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত। সেখানে তিনি ব্রেট হার্ট এবং আর্তিমাস ওয়ার্ডের মতো লেখকের সাথে পরিচিত হন। এ সময়ে তরুণ কবি ইনা কুলব্রিথের সঙ্গে তার সম্ভবত প্রেম হয়েছিল।
বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসা বরাবরই আকৃষ্ট করত টোয়েইনকে। বিখ্যাত বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলার সঙ্গে টোয়েইনের ছিল অত্যন্ত নিকটবর্তী এবং দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব। তার বই ‘অ্যা কানেন্টিকাট ইয়াঙ্কি ইন কিং অথার’স কোর্ট’-এ তিনি সমসাময়িক আমেরিকান প্রেক্ষাপটে একটি সময় পরিভ্রমণকারী চরিত্রের অবতারণা করেছিলেন। চরিত্রটি নিজস্ব বিজ্ঞানের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ইংল্যান্ডের কিং আর্থারের সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির পরিচয় করিয়ে দেন। পরবর্তীকালে একই ধরনের কাল্পনিক চরিত্রের ব্যবহার একসময় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীগুলোতে অতি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। ১৯০৯ সালে টমাস এডিসন টোয়েইনের সাথে তার কানেকটিকাটের বাড়িতে দেখা করেন এবং টোয়েইনের গতিচিত্র ধারণ করেন। সেই গতিচিত্রের কিছু অংশ ১৯০৯ সালে তৈরি হওয়া ‘দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য পপার’ চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল।
টোয়েইন তার লেখালেখি থেকে প্রচুর অর্থ আয় করেছিলেন। কিন্তু সে অর্থের একটি বড় অংশ তিনি নতুন আবিষ্কার এবং প্রযুক্তিতে, বিশেষ করে ‘পেইগ মুদ্রণসন্নিবেশকারী যন্ত্রের’ ওপর বিনিয়োগ করার মাধ্যমে খুঁইয়েছিলেন। যন্ত্রটি ছিল অতি নিপুণ প্রকৌশলের ফসল যার কাজ দর্শকদেরকে মুগ্ধ করত, কিন্তু এটি ছিল ভঙ্গুরপ্রবণ। ১৮৮০ থেকে ১৮৯৪ সালের মধ্যে টোয়েইন এই যন্ত্রের পেছনে ব্যয় করেছিলেন তিন লাখ ডলার। কিন্তু এটি পুরোপুরি উপযুক্ত হওয়ার আগেই লাইনোটাইপ যন্ত্রের কারণে অযোগ্য হয়ে যায়। ফলে টোয়েইন তার বই থেকে উপার্জিত অর্থ হারানোর পাশাপাশি স্ত্রী অলিভিয়ার সম্পত্তির উল্লেখযোগ্য অংশও হারিয়ে ফেলেন।
১৯০৬ সালের ঘটনা। টোয়েইন ‘নর্থ আমেরিকান রিভিউ’তে তার আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন। এপ্রিলে টোয়েইন খবর পান তার বান্ধবী ইনা কুলবার্থ ১৯০৬ সালের স্যানফ্রান্সিসকো ভূমিকম্পে তার সহায় সম্পত্তির প্রায় সবকিছুই হারিয়ে ফেলেছেন। বান্ধবীর এ দুঃসময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে টোয়েইন তার স্বাক্ষরসংবলিত কিছু পোট্রেইট ছবি বিক্রির জন্য তুলে দেন। কুলবার্থকে আরো বড় পরিসরে সাহায্য করার জন্য জর্জ হোয়ার্টন জেমস নিউইয়র্কে টোয়েইনের সাথে দেখা করেন এবং একটি নতুন পোট্রেইট সেশন করার ব্যবস্থা করেন। প্রথমে গড়িমসি করলেও টোয়েইন শেষমেশ স্বীকার করেন যে উক্ত ব্যবস্থাপনায় তোলা চারটি পোট্রেইট ছবিই ছিল তার তোলা সব ছবির মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
১৯০৯ সালে টোয়েইন মন্তব্য করেন : ‘১৮৩৫ সালে হ্যালির ধূমকেতুর সাথেই আমি পৃথিবীতে এসেছিলাম। আগামী বছর এটি আবার আসছে এবং আমি আশা করি এর সাথেই আমি আবার চলে যাব। হ্যালির ধূমকেতুর সাথে সাথেই যদি আমার প্রস্থান না ঘটে তাহলে এটি হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখজনক ঘটনা। কোনো সন্দেহ নেই যে স্রষ্টা বলেছিলেন : এই হলো দুই দায়িত্বজ্ঞানহীন উন্মাদ; এরা এসেছিল একসাথে, এদের যেতেও হবে একসাথে।’
২১ এপ্রিল, ১৯১০। যখন পৃথিবীর আকাশে আরেকবার দেখা গেল হ্যালির ধূমকেতু, কাকতালীয়ভাবে সেদিনই, হার্ট অ্যাটাকে চিরনিদ্রায় ঢলে পড়লেন মার্ক টোয়েন। সত্যিই মার্ক টোয়েন আর হ্যালির ধূমকেতু যেন ব্যাখ্যাতীত বিস্ময়।