ইসলামি সমাজ বিশ্লেষণ একটি তাওহিদভিত্তিক বিশ্বদৃষ্টির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যা শুধু বাহ্যিক সামাজিক গঠন বা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর পর্যালোচনায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজের অন্তর্নিহিত নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও কসমিক মাত্রাকেও গুরুত্ব দেয়। আধুনিক সমাজবিজ্ঞান যেভাবে সমাজকে বস্তুগত উপাদান ও ইতিহাসনির্ভর আচরণ কাঠামোর মাধ্যমে ব্যাখ্যা করে, ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এক ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যেখানে মানুষের সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোকে মূল্যায়ন করা হয় তার ঈমান, আখলাক এবং কল্যাণী-অকল্যাণী ভূমিকার আলোকে।
ইবনে খালদুনের ‘আসাবিইয়াহ’ বা সামাজিক বন্ধন তত্ত্ব থেকে শুরু করে শাহ ওয়ালিউল্লাহর ‘ইরতিফাকাত বা সহায়ী ক্রমবিকাশ তত্ত্ব, এবং সমসাময়িক চিন্তাবিদদের রাষ্ট্র ও সমাজকেন্দ্রিক বিশ্লেষণ- সবই ইসলামি সমাজ বিশ্লেষণের একটি অন্তঃপ্রবাহ রচনা করে। মূলত এখানে সমাজকে বোঝা হয় একটি ঈমানভিত্তিক কাঠামো দিয়ে, যার লক্ষ্য দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ের পরিপূর্ণ কল্যাণ।
ইসলামি সমাজ বিশ্লেষণের প্রথম স্তম্ভ হলো- ঈমানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি। সমাজকে শুধু মানুষের পারস্পরিক চুক্তি বা ঐতিহাসিক বাস্তবতায় গঠিত রূপ হিসেবে দেখা হয় না, বরং তাকে আল্লাহর নির্দেশিত একটি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত ধারা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ব্যবস্থার কেন্দ্রে রয়েছে তাওহিদ- আল্লাহর একত্ব, সার্বভৌমত্ব ও বিধানদানের পূর্ণ অধিকার। এর সঙ্গে যুক্ত হয় রিসালাত- নবীদের মাধ্যমে প্রাপ্ত হিদায়াত বা নির্দেশনা, যা সমাজে নৈতিকতা ও কর্তব্যবোধের পথ দেখায়। আর আখেরাহ- চূড়ান্ত পরিণতি ও জবাবদিহিতার ধারণা সমাজের প্রতিটি স্তরে দায়িত্ব ও নৈতিকতার একটি অভ্যন্তরীণ সংবেদন সৃষ্টি করে। ফলে প্রতিটি সামাজিক আচরণ, সম্পর্ক ও কাঠামোর কেন্দ্রে থাকে আল্লাহর রুবুবিয়্যাহ (পালনকারিতা) ও উলুহিয়্যাহ (সার্বভৌম কর্তৃত্ব) এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রদর্শিত হেদায়াত ও নৈতিক নির্দেশনা।
ইসলামি সমাজ বিশ্লেষণে মানুষকে শুধু একটি সামাজিক প্রাণী হিসেবে দেখা হয় না, বরং তাকে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হয়- যার মধ্যে আমানত ও দায়িত্বের ধারণা নিহিত। মানুষ মূলত একটি নৈতিক ও দায়িত্বশীল সত্তা, যার আচরণ মূল্যায়ন করা হয় তার স্বাধীন ইচ্ছা, আল্লাহভীতি এবং প্রতিনিধিত্বমূলক ভূমিকার ভিত্তিতে। সমাজে তার আচরণ হবে ন্যায় ও নৈতিকতার প্রতিফলন, আর তার সামাজিক ভূমিকা হবে ইহকালীন ও পরকালীন দায়বদ্ধতা পূরণের একটি উপায়। এখানেই ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি মার্কসীয় শ্রেণি বিশ্লেষণ বা দার্শনিক বস্তুবাদ থেকে মৌলিকভাবে পৃথক। কারণ এখানে মানব আচরণের মাপকাঠি শুধু শ্রেণিসংগ্রাম নয়, বরং নৈতিক আত্মজিজ্ঞাসা ও আধ্যাত্মিক দায়বদ্ধতা।
ইসলামি সমাজ কাঠামোর দ্বিতীয় স্তম্ভ হলো- শরিয়াহর আনুগত্য ও প্রতিপালন। ব্যক্তি তার আত্মিক, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি স্তরে শরিয়াহর বিধান পালনে সচেষ্ট থাকবে। এই আনুগত্য শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক আইন মানার বিষয় নয়, বরং এটি একটি সচেতন, ঈমানভিত্তিক প্রয়াস- যার লক্ষ্য সমাজে ন্যায়, উত্তমতা ও সর্বজনীন কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করা। বিশেষত, অর্থনীতি ও রাজনীতির মতো জটিল সামাজিক কাঠামোয় শরিয়ার নৈতিক মানদ- অনুসারে ন্যায় ও ভারসাম্য এবং জনকল্যাণ অনুসন্ধান একটি কেন্দ্রীয় নীতি হয়ে ওঠে।
ইসলামি দৃষ্টিতে সমাজকে জাতীয়তা, বর্ণ বা শ্রেণির ভিত্তিতে ভাগ করা হয় না। এর কেন্দ্রীয় পরিচয় হলো ঈমানভিত্তিক উম্মাহ, অর্থাৎ এক অভিন্ন বিশ্বাসের জনগোষ্ঠী- যাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, ন্যায় ও ভ্রাতৃত্ববোধ বিদ্যমান। এই ধারণা রাজনৈতিকভাবে একটি সীমাহীন ভ্রাতৃত্বের ভিত্তি গঠন করে, যেখানে সামাজিক সংহতির মূল চালিকাশক্তি হলো ঈমান, তাকওয়া ও ন্যায়ের আদর্শ। ইসলামি সমাজ বিশ্লেষণে সামাজিক উত্থান-পতনের কারণ শুধু বাহ্যিক অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক ঘটনাক্রমে নির্ধারিত হয় না, বরং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক স্থিতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কোরআন স্পষ্ট বলেছে, ‘আল্লাহ কোনো জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেরাই নিজেদেরকে পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ : ১১)। অতএব, সমাজে অবক্ষয় দেখা দিলে তা হবে ঈমান, তাকওয়া ও আদলের অভাবের ফলাফল। পক্ষান্তরে সমাজের উন্নতি হবে নৈতিক শুদ্ধতা, হিদায়াতের অনুসরণ ও জনকল্যাণে সক্রিয় অংশগ্রহণের ফল। ফলে, একজন মুসলিমের ব্যক্তিগত ও সামাজিক আচরণকে বিচার করা হবে: ক. তাওহিদণ্ডরিসালাত-আখেরার প্রতি তার সাড়া ও আনুগত্যের ভিত্তিতে; খ. আল্লাহর নির্দেশপ্রাপ্ত হিসেবে শরিয়ার প্রতি তার দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে; গ. ন্যায় ও কল্যাণের সাপেক্ষে তার সামাজিক ভূমিকার আলোকে।
ইসলামি সমাজ কাঠামোর মূল লক্ষ্য হলো, আল্লাহর বিধান অনুযায়ী এমন এক ন্যায়ভিত্তিক, কল্যাণকর ও পরিশুদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা গঠন, যা মানবজাতির প্রকৃত মর্যাদা, দায়িত্ব ও চূড়ান্ত মুক্তির পথনির্দেশ করে। সামাজিক জীবনে কল্যাণ- পরিশুদ্ধিকে অবলম্বন করছে না বিশৃঙ্খলা-সমস্যা তৈরি করছে, দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, সেই সাপেক্ষে বিচার হবে মানুষের আচরণ।
মুসলিম সমাজ বিশ্লেষণের একটি সংহত বিশ্লেষণ কাঠামো অনুসন্ধান জরুরি, যাতে বিশ্বাস, চরিত্র, শরিয়ত, সংস্কৃতি ও বাস্তবতার পারস্পরিক সংযোগকে পর্যবেক্ষণ করা যায়। এই কাঠামোকে মূলত পাঁচটি আন্তঃসম্পর্কিত স্তরে ভাগ করা যায়-
১. ঈমানি স্তর : এই স্তরটি হলো সব আচরণের ভিত্তি। একজন মুসলিমের সমস্ত কর্ম ও বর্জন ঈমানের দ্বারা অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। ঈমান শুধু মুখের উচ্চারণ নয়, বরং অন্তরের গভীরে প্রোথিত এক জীবন্ত প্রেরণা যা আল্লাহর অস্তিত্ব, তাওহিদ, ফেরেশতা, নবী, আখেরাত, কিতাব ও তাকদিরে বিশ্বাসের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। এ স্তর অনুসন্ধান করবে মনোজাগতিক বাস্তবতা। যেমন : একজন মুসলিম ঈমানের ঘোষণা ও সত্যায়নে যত্নবান কি না? তার কর্মে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে কি? গোপনে ও প্রকাশ্যে তার মধ্যে একরকম ঈমানি দায়বদ্ধতা রয়েছে কি না? এজাতীয় বিষয়াবলিকে নজরে রেখে মুসলিম সমাজে ব্যক্তির আচরণ বিশ্লেষণ করা হবে।
২. আখলাকি স্তর : ঈমানের ফল স্বরূপ মানুষের অন্তর ও চেতনায় গঠিত হয় এক বিশেষ ধরণের চরিত্র- যা নিয়ন্ত্রণ করে তার ভাষা, প্রবণতা ক্ষোভ, লোভ, ক্ষমা, ধৈর্য ও নম্রতাকে। এই স্তরে মূল্যায়ন করা হয় আচরণীয় বাস্তবতাকে; আত্মনিয়ন্ত্রণ, সদাচরণ ও আত্মশুদ্ধির মাত্রাকে। এই স্তর অনুসন্ধান করবে আচরণীয় নানা দিক। যেমন : ব্যক্তি কতটা সততার অধিকারী, বিশ্বাসযোগ্য, সংযত ও দয়ালু? রাগ, হিংসা, অহংকার- এসব থেকে সে নিজেকে কীভাবে মুক্ত রাখছে?
৩. শররি স্তর : এই স্তরে আচরণের বিধি ও সীমার বিচার হয় ইসলামের শরিয়তের আলোকেই। অর্থাৎ কোনো কিছু ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুবাহ, হারাম, মাকরুহ বা নাজায়েজ- এরূপ শররি অবস্থান থেকে আচরণ বিশ্লেষণ করা হয়। এতে ব্যক্তির লিপ্ততাণ্ডঅলিপ্ততার নানা মাত্রা তার আচরণ বিচারের পথ দেখাবে। এ স্তর ব্যক্তিকে বিশ্লেষণ করবে আনুগত্যের মাপকাটি দিয়ে। যেমন : ব্যক্তি বা সমাজ শরয়ি নির্দেশাবলির প্রতি কতটা আন্তরিক ও নিয়মানুবর্তী? হালাল রিজিক, ইবাদত, জুলুমণ্ডইনসাফ, লেনদেন, বিচার- এসব বিষয়ে শরিয়তের অনুসরণ রয়েছে কি?
৪. উরফি স্তর : উরফ সমাজের প্রচলিত রীতিনীতিকে বোঝায়, যা শরিয়তের সীমার ভেতরে থাকলে গ্রহণযোগ্য। এই স্তর আমাদের জানায়, ব্যক্তি বা সমাজ ঐতিহ্যগত, সাংস্কৃতিক বা আঞ্চলিক অভ্যাস কতটা শরিয়তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই স্তরের রয়েছে বিশ্লেষণযোগ্য নানা দিক। যেমন : কোনো রীতিনীতি কি ইসলামবিরোধী হয়ে পড়েছে? আচার-আচরণে ইসলামবৈরি সংস্কৃতি বা ভ্রান্ত রেওয়াজ কতটা প্রভাব ফেলছে?
৫. ইজতিমায়ি-মায়াশি স্তর : এটি বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপটে আবর্তিত। যা সামাজিক কাঠামো, অর্থনৈতিক জীবন, বৈষম্য ও জীবনসংগ্রাম, রাজনৈতিক অবস্থা, শিক্ষাগত পরিস্থিতি ইত্যাদিকে অবলোকন করে- যার প্রভাব পড়ে ব্যক্তির আচরণে। দারিদ্র, নিরাপত্তাহীনতা, বঞ্চনা মানুষকে সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করতে চাইবে। কিন্তু ব্যক্তি ও সমাজের আচরণীয় সঠিকতাই ইসলামের অন্বেষা। এই স্তরে পর্যবেক্ষণীয় বিষয়াবলী বিস্তর। যেমন : সামাজিক ন্যায়পরায়ণতা উপস্থিত না অনুপস্থিত? এতে ব্যক্তির ভূমিকা কেমন? ব্যক্তির আচরণে কতটা দুর্ব্যবহার ও নিষ্ঠুরতা সৃষ্টি হয়েছে? জীবিকাগত বাস্তবতায় একজন ব্যক্তি কোথায় দাঁড়িয়ে আছে ঈমান ও নৈতিকতার প্রশ্নে?
আচরণ বিশ্লেষণের পাঁচটি কার্যক্ষেত্র
এই স্তরসমূহের আলোকে মুসলিম আচরণ বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে পাঁচটি মূল কার্যক্ষেত্র দাঁড়ায়। যেমন : এক. ইবাদাতমূলক আচরণ। দুই. লেনদেনসংক্রান্ত আচরণ। তিন. আচার-ব্যবহার। চার. ধ্বংসকারী বিষয়গুলো পরিহার। পাঁচ. তওবা করা ও গোনাহ থেকে ফিরে আসার অনুশীলন।
এমনতরো বৈশিষ্টের ভিত্তিতে মুসলিমদের আচরণ বিশ্লেষণ করা হবে। এই সব উপাদান ও বৈশিষ্টের বিচারে মুসলিম সমাজে ব্যক্তিবর্গের আচরণকে বিশ্লেষণ করা হবে। এগুলো দক্ষিণপন্থি /বামপন্থি/মডারেট/র্যাডিক্যাল নয়, বরং অন্তর্নিহিত ধর্মীয় অবস্থান দ্বারা তা নির্ধারিত। এতেও খুব সরলভাবে বর্গিকরণের সুযোগ নেই। মুসলিম সমাজ থেকে কেউ ধর্মহীন হয়ে যেতেও পারে। কেউ হতে পারে ধর্মত্যাগী। কিন্তু সাধারণভাবে মুসলিম সমাজে কেউ খোদাভীরু, কেউ গোনাহগার, কেউ অতাচারী আবার কেউ ন্যায়পন্থি, কেউ পাপাচারী আবার কেউ নেককার। কারও মধ্যে কপটতা আছে, আবার কেউ নিষ্ঠাবান। এইভাবে নানা বর্গ কোরআন-সুন্নাহ ও মুসলিম উম্মাহের অনুশীলনের হাজার বছরের ধারাবাহিকতা থেকে চলে এসেছে। কিছু দৃশ্যমান চিহ্নকে ভিত্তি করে এসব বর্গে কাউকে স্থায়ী, নিরঙ্কুশ ও সাধারণভাবে বর্গীকরণ করা চলে না। প্রতিটি বিষয়ে রয়েছে মৌলিক নীতিমালা, আইনগত বিধি-ব্যবস্থা, নিয়ন্ত্রক নিয়মণ্ডবিশেষ শর্তাবলি। এখানে যথার্থতা চাইলে স্বেচ্ছাচার ও অপপ্রয়োগের সুযোগ নেই। ইসলামি জ্ঞানব্যবস্থা এই পথরুদ্ধ করেছে। আবার প্রত্যেক ভালোর জন্য আছে মন্দে জড়াবার আশঙ্কা ও পাপের ভয়, প্রত্যেক মন্দের জন্য আছে তাওবা ও শুদ্ধতার সম্ভাবনা ও নেক হবার উন্মুক্ত দরোজা। ফলে নবীজির (সা.) সাহাবি হয়েও হানজালা (রা.) ভীত থাকেন নেফাকের ভয়ে। এই ভয় বিচলিত করে আবু বকর-ওমরকেও (রা.)। আবার ভয়াবহ পাপলিপ্ত মানুষটির জন্যও থাকে আল্লাহর খাঁটি বান্দা হবার খোলা দরোজা।
ইসলামের এই চিরায়ত ও সাধারণ অবস্থান থেকে বিচ্যুতি ও মুসলিম সামাজিক জীবনের চরম ভাঙনের প্রকল্প হিসেবে র্যান্ড কর্পোরেশনের বর্গীকরণ মুসলিম সমাজে ক্রিয়াশীল। যার অশুভ প্রভাব থেকে পরিত্রাণের জন্য ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুশীলনের মধ্য দিয়ে সমাজ বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তা ক্রমবর্ধমান। র্যান্ডের শ্রেণিবিন্যাসের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানে শুধু রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, বরং আত্মচিন্তা, আত্মমর্যাদা ও সত্তানুভূতির স্বাধীনতা রক্ষা করা।
আমাদের বুঝতে হবে কে আমাদের প্রতিপক্ষ, কোন সংঘাতের ভেতরে আমরা আছি, কী আমাদের অস্ত্র আর কী সেই যুদ্ধের ভাষা? ইসলামের নিজস্ব ভাষা, দর্শন ও দৃষ্টিকোণ থাকা সত্তেও র্যান্ড কর্পোরেশনের এই পরিভাষা ও শ্রেণিকরণ এক ধরনের যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে প্রতিপক্ষ আমাদের মৌলিক উপলব্ধি ও চেতনার কাঠামোতেই হস্তক্ষেপ করছে। যুদ্ধটা শুধু জাহিরে নয়- চেতনায়, শব্দে, সংজ্ঞায়, স্মৃতিতে। ইসলামের নিজস্বতার অবলম্বনে আমাদের প্রয়োজন, এক গাঠনিক ভাষা বুনন, যার শিকড় তাওহিদের ভেতরে, শরীর হিকমা দিয়ে তৈরি, ডানা গঠিত নবুয়্যতের হেদায়েতে, উড়াল চালিত হবে সালাফের ক্রমধারায়।