প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ২৫ আগস্ট, ২০২৫
পৃথিবীর স্থিতিশীলতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে মহামূল্য নিয়ামত। তিনি পৃথিবীকে স্থির রাখেন বলেই আমরা নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারি, বাড়িঘর নির্মাণ করতে পারি। কখনো উল্টে পড়ে যাওয়ার ভয় আমাদের মধ্যে কাজ করে না। এই নিরাপত্তা মহান আল্লাহ আমাদের দিয়ে রেখেছেন। পৃথিবী যাতে স্থির থাকে, আমরা যাতে নিরাপদ থাকি, তাই তিনি পৃথিবীকে স্থিতিশীল রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তিনি খুঁটি ছাড়া আসমানগুলো সৃষ্টি করেছেন, যা তোমরা দেখছ, আর জমিনে স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পাহাড়, যাতে তা তোমাদের নিয়ে হেলে না পড়ে, আর তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন প্রত্যেক প্রকারের প্রাণী; আর আসমান থেকে আমি পানি পাঠাই। অতঃপর তাতে আমি জোড়ায় জোড়ায় কল্যাণকর উদ্ভিদ জন্মাই।’ (সুরা লুকমান : ১০)। এই আয়াতের দ্বারা মহান আল্লাহ আমাদের বুঝিয়েছেন যে কীভাবে তাঁর সৃষ্টিগুলো তাঁর দয়ায় আমাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। কীভাবে আমরা সার্বক্ষণিক মহান আল্লাহর অগণিত নিয়ামত ভোগ করছি, যা আমরা অনুভবই করি না। কিন্তু কখনও কখনও আমাদের পাপের কারণে মহান আল্লাহ সামান্য কিছু নিদর্শন দেখিয়ে আমাদের সতর্ক করেন। ভূমিকম্পও মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তেমনই একটি সতর্কবার্তা। মানুষ যখন পাপে নিমজ্জিত হয়ে যায়, আল্লাহকে ভুলে যায়, গান-বাজনা ও মদে সয়লাব হয়ে যায়, তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্কবার্তাস্বরূপ বিভিন্ন রকম আজাব আসে, যেগুলো আমরা নিছক প্রাকৃতিক দুর্যোগ মনে করি। হাদিস শরিফে এসেছে, ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ভূমিধস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণস্বরূপ আজাব এই উম্মতের মাঝে ঘনিয়ে আসবে। জনৈক মুসলিম ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! কখন এসব আজাব সংঘটিত হবে? তিনি বললেন, যখন গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র বিস্তৃতি লাভ করবে এবং মদ্যপানের সয়লাব হবে।’ (তিরমিজি : ২২১২)। কেয়ামতের আগে যেহেতু এ ধরনের পাপাচার বেড়ে যাবে, পাপের উপকরণগুলো সহজলভ্য হবে, তাই ভূমিকম্প, ভূমিধসের মতো আজাবও তখন বেশি বেশি আসবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বা খুনখারাবি বৃদ্ধি পাবে। তোমাদের ধন-সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে।’ (বোখারি : ১০৩৬)। তাই মুমিনের উচিত, এ ধরনের ফিতনা থেকে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা। পৃথিবীর কোনো প্রযুক্তি দিয়ে আল্লাহর ক্রোধ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ চাইলে আমাদের পাপের জন্য যেকোনো মুহূর্তে আমাদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারেন। তাই এ ধরনের সতর্কবার্তা এলে আমাদের একমাত্র করণীয় থাকে পাপের পথ থেকে ফিরে আসা, মহান আল্লাহর কাছে খাঁটি মনে তাওবা করা। আল্লাহর কাছেই আশ্রয় চাওয়া।