সবকিছু সময়ের কাছে ন্যস্ত করা উচিত। যেটা আজ খুব সিরিয়াস, দুদিন পেরুতেই সেটা পানসে হয়ে যাবে। কোনো ঘটনায় আজকে যে প্রতিক্রিয়া হতো, তা দুদিন বাদেই বদলে যাবে। ভাষা ও ভাব সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যাবে। দুনিয়ার যত অশান্তি, তা গরম গরম মন্তব্য করার জন্যই হয়। একটু সময় ধৈর্য ধরুন- রহম পাবেন। কেউ কষ্ট দিচ্ছে, ঠকাচ্ছে কিংবা অপবাদ দিচ্ছে- সবর করুন। আপনি ঠকবেন না। মানুষ মানুষকে ঠকাতে পারে না। সাময়িক অসুবিধা হয়; কিন্তু কিছুই হারিয়ে যায় না। ভালো কিছু দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়ে ফেরত আসে। আমরা খুব দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ভাবি জিতে গেছি। বিতর্কে অংশগ্রহণ করতে না পারলে মনে হয় হেরে যাচ্ছি। অথচ চুপ থাকা জয়ী হওয়ার প্রথম এবং প্রধান শর্ত। কেউ আপনাকে অপমান করছে, অপবাদ দিচ্ছে? সময় আপনার হয়ে প্রতিশোধ তুলবে।
অন্য কেউ আপনার হয়ে উত্তর দিয়ে দেবে। জিহ্বার নিয়ন্ত্রণের চেয়ে বড় কোনো জিহাদ নেই। মুখে আসলেই সব কথা বলে ফেলা উচিত নয়। উচ্চারিত কথা আর ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। ভুল বাক্যের দাগ থেকে যায়। মানুষের সক্ষমতায় সবকিছু নেই। ক্ষমতা থাকলেও সবসময়, সবার সাথে ক্ষমতা দেখানো উচিত নয়। যে কাজ বাক্য ছাড়া হচ্ছে, সেখানে শব্দ বিনিয়োগ করা মানে অপচয়। একটু ধৈর্য ধরুন, ভেবে দেখুন। এখনই করতে হবে, বলতে হবে কিংবা এখনই লাগবে- এই জেদ মানুষকে পরাজিত করে। সময় নিয়ে ভাবলে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়। সত্য প্রকাশের জন্য মিথ্যাকে সুযোগ দিতে হয়। মাথা গরম করে যে কাজ করবেন, যে কথা বলবেন, তা পরিণামে লজ্জা আনে। শান্ত থাকুন- ফলাফল আপনার পক্ষে আসবে। অশান্তদের দুনিয়ায় অশান্তিটাই বেশি।
কেউ বকে যাচ্ছে? বকুক না। ক্লান্ত হলেই থেমে যাবে। কোনো কুকুর সারাদিন ঘেউ ঘেউ করতে পারে? বকুনিতে তাল মেলালে বরং শত্রুতা দীর্ঘায়িত হবে। একজন বলে যাচ্ছে- শুনে যান। কথার মধ্যে কথা না বলাই ভালো। যখন তিনি থামবেন, তখন তার বলার মধ্যে ঘটে যাওয়া ভুলগুলো ধরে দিন। যিনি কিছুই বলেন না, তার তো ভুল হওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। দেখে নেব? নিন। তবে দুদিন যাক।
দেখবেন, আর দেখে নিতে ইচ্ছাই করবে না। শাসাবেন? সময় নিন। তখন কিছু বলার ইচ্ছাই মরে যাবে। আমাদের সামনে অনেক সময়। সবকিছুর ফয়সালা কেন আজকেই করতে হবে? দেখুন, বুঝুন এবং ভাবুন। রাত ফুরিয়ে যাচ্ছে না। রাতের পরে যে দিন আসবে, সেটাও আপনার। সময়কে পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করুন। সময় তখনই পক্ষে বলবে, যখন আপনি অসময়ের বিপক্ষে দাঁড়াবেন। সময়ের সঙ্গে সন্ধি করতে সময়কে সঙ্গ দিতে হয়। মানুষ আসলে বাঁচে ভালো ব্যবহারে। আপন হয় সুন্দর আচরণে। ক্ষমা করা, উপেক্ষা করা, ইগনোর করার গুণগুলো ধারণ করতে শিখুন। উপেক্ষা না করলে আকর্ষণ বাড়বে না। বিলম্বিত ভালোবাসাই সুন্দর। অধৈর্য হয়ে সুপথ বিচ্যুত হবেন না। সবরের শিক্ষা অর্জন করুন। সুদিন সামনে।