শৃঙ্খলার কমতি থাকে না যেন

ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাজধানীতে কোরবানির হাট বসে। এবারও বসছে। রাজধানীবাসীর কোরবানির পশু কেনার সুবিধার্থে এবার বসছে অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৬টি হাট। ইজারা চূড়ান্ত করা হয়েছে। উত্তর ঢাকায় বসছে ১০টি এবং দক্ষিণ ঢাকায় ৬টি হাট। আরও ৩টি হাট বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে, তবে দরপত্রে কাঙ্ক্ষিত দর না পাওয়ায় এসবের ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। মেয়র হিসাবে ইশরাকের শপথ পড়ানোর দাবিতে চলমান আন্দোলনের কারণে নগর ভবনের কাজকর্ম বন্ধ থাকায় সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।

কোরবানির গরুর হাট নিয়ে নানা ধরনের ঝামেলা হয়। প্রথমত, ইজারা দেওয়ার ব্যাপারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে। হাটগুলো শৃঙ্খলার সঙ্গে পরিচালনা করা যায় না। চাঁদাবাজির অভিযোগ তো আছেই। পশুর দামও অযৌক্তিকভাবে ওঠানামা করে। এবার হাটগুলোর ইজারা কীভাবে দেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে সমর্থিত খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে আমরা বিশ্বাস করছি, যোগ্য লোক কিংবা কোনো গ্রুপকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। একটা সময় ছিল, যখন ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর জন্য ভারত, মিয়ানমার ও নেপালের ওপর নির্ভর করতে হতো। এবারের পরিবেশ ভিন্ন। কোরবানির হাটগুলোয় কতসংখ্যক গরু আনা হবে, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে কিছু বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে এবং কোরবানি-পরবর্তী সময়ে পশুর চামড়ার মান বজায় রাখার ব্যাপারে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের উভয় অংশকে যোগ্যতার পরিচয় দিতে হবে। সড়কের উপরে যত্রতত্র কোরবানির পশু জবাই না করে যথাসম্ভব নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করার নির্দেশনা থাকতে হবে। পেশাদার বা মৌসুমি কসাইকে পশু কোরবানি ও পরবর্তী কাজগুলো সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, কোরবানির পর নাড়িভুঁড়ি ও অন্যান্য বর্জ্য যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা করে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে সিটি কর্পোরেশনসহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা থাকতে হবে। পশুর হাটে যাতে কোনোভাবেই চাঁদাবাজি হতে না পারে, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কোরবানিযোগ্য পর্যাপ্ত পশু থাকলেও একশ্রেণির অসাধু, অতি মুনাফালোভী কারবারি নানাভাবে পশুর কৃত্রিম সংকট তৈরি করে স্বার্থ হাসিল করে। এতে পশুর ক্রেতারা ন্যায্য দামের অতিরিক্ত দামে পশু কিনতে বাধ্য হয়। সবটা মিলিয়ে আমরা আশা করব, এবারের কোরবানির পশুর হাট অত্যন্ত শৃঙ্খলার সঙ্গে পরিচালিত হবে এবং রাজধানীর পরিবেশ দূষিত হবে না।