মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন সড়ক থেকে উঠিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা একটা ভালো খবর। উল্লেখ্য, সারা দেশে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের সংখ্যা ৭৫ হাজার। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, সড়কগুলোকে ধাপে ধাপে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনশূন্য করে ফেলার কার্যক্রম চলছে। অবশ্য গত বছরের অক্টোবরেই বলা হয়েছিল, এ বছরের মে মাস থেকে সড়কে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের পরও দুই মাস পেরিয়ে গেছে, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ধারা ৩৬ অনুযায়ী, বাস ও মিনিবাসের জন্য ইকোনমিক লাইফ ৪০ বছর এবং ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ অন্যান্য মালবাহী মোটরযানের জন্য ২৫ বছর নির্ধারণ করা আছে। এ মেয়াদ শেষ হলেই এসব যানের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে না। এর ফলে সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা, দেখা দিচ্ছে নানা বিশৃঙ্খলা। উপরন্তু, যাত্রীসেবার মানও নেমে গেছে নিচে। ২০২৩ সালে তৎকালীন সরকার প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সড়ক থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন উঠিয়ে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, পরিবহন মালিকদের চাপে তিন মাস পর প্রজ্ঞাপনটি স্থগিত করা হয়েছিল।
বর্তমান সরকারও যে এক্ষেত্রে সফল হবে, নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, কারণ নির্ধারিত সময়ের পর এরইমধ্যে দুই মাস পার হয়ে গেছে। সড়ক থেকে ফিটনেসবিহীন যানবাহন তুলে নেওয়ার প্রশ্নে অনেকেই বিরুদ্ধ মত দিচ্ছেন। তারা বলছেন, এ ধরনের যানবাহনের অনেক মালিক আর্থিকভাবে দুর্বল। তাদের শেষ সম্বলটুকু সরিয়ে ফেললে তারা দুর্দশায় পড়বেন। তাদের আরও যুক্তি, ৭৫ হাজার যানবাহন চলাচল করতে না পারলে সারা দেশে পরিবহন সংকট দেখা দেবে। তাদের এ দুই যুক্তি সাধারণভাবে গ্রহণ করা চলে। কিন্তু কথা হচ্ছে, সড়কে সার্বিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও দুর্ঘটনা রোধে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।
সমগ্র নাগরিক সমাজের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু মানুষের আর্থিক ক্ষতি মেনে নিতে হবে বৈকি। দ্বিতীয়ত, যানবাহনের যে সংকট দেখা দেবে, তা পুষিয়ে নিতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে উদ্যোগের অভাব হবে না বলেই প্রতীয়মান হয়। আমাদের কথা হলো, মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের ব্যাপারে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ইতিবাচক। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়া দরকার।