প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ৩১ জুলাই, ২০২৫
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন একধাপে পৌঁছাতে যাচ্ছে। প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ এবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং উড়োজাহাজ কিনতে যাচ্ছে। পাশাপাশি ওয়াশিংটনে ২৯ ও ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হচ্ছে তৃতীয় ও চূড়ান্ত শুল্ক আলোচনা। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পকে রক্ষায় বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভিয়েতনাম এরই মধ্যে তাদের ওপর আরোপিত ৪৬ শতাংশ শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া, এমনকি ভারতও খুব শিগগির বাণিজ্যচুক্তি সম্পাদন করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্রুত একটি কার্যকর বাণিজ্যচুক্তি না করতে পারলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে ধস নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আসন্ন বৈঠকে বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি খলিলুর রহমান ও বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনেক দিন ধরেই আলোচনায় তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করে আসছেন। তাদের মতে, সরকারের অদক্ষতায়ই এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি। এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আসন্ন আলোচনায় একটি অনুকূল দ্বিপক্ষীয় চুক্তি নিশ্চিত করা। তা না হলে ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নতুন অতিরিক্ত শুল্কই কার্যকর হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বাণিজ্য ঘাটতি আছে। তার থেকেও বড় ঘাটতি রয়েছে ভিয়েতনামের সঙ্গে। যা হোক, বাংলাদেশ বোয়িং কেনা, তুলা ও সয়াবিন আমদানির উদ্যোগ নিয়ে এই ঘাটতি কমানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, আমরা আশা করি, চুক্তিতে পৌঁছাতে তা কিছুটা হলেও সহায়তা করবে।
বাংলাদেশের জন্য এ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করে একটি সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত চুক্তিতে পৌঁছানো। কোনো অযৌক্তিক শর্তের ফাঁদে না পড়ে রপ্তানিমুখী শিল্পের সুযোগ বাড়ানো, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং শুল্ক সুবিধা অর্জন করা দরকার। সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্যোগ এবং শুল্ক আলোচনা- উভয়ই বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই আলোচনায় একটি সফল সমঝোতা না হলে তৈরি পোশাক খাত এবং এর সঙ্গে জড়িত লাখ লাখ শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাই একটি কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য সরকারকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।