প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
দেশের সাধারণ মানুষ নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামের চাপে দিশাহারা। অনেকদিন ধরেই এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন, মজুত ও সরবরাহ- এসব খাতে কোনো সংকট না থাকলেও খুচরা বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে। দেশ-বিদেশের সাম্প্রতিক তথ্য বিশ্লেষণ করে ভোক্তারা আশা করেছিল, চালের দাম কমবে। কিন্তু দাম তো কমছেই না, উলটো বাড়ছে। কেন গত এক বছর ধরে চালের বাজার এমন অস্থির, তা পর্যালোচনা করে সমস্যাগুলোর সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। অভিযোগ রয়েছে, মিল মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে ভোক্তাদের স্বল্পমূল্যে পণ্য দিলেও তা সামগ্রিক পরিস্থিতিতে কেন প্রভাব ফেলতে পারছে না, এটাও খতিয়ে দেখতে হবে। অযৌক্তিকভাবে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পণ্য মজুত করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে দ্রুত। যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কারসাজি করে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তোলে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে দেরি করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। অতীতে আমরা লক্ষ্য করেছি, ভরা মৌসুমেও চাল কিনতে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন ভোক্তারা। এমন ঘটনা কাম্য নয়।
বাজারে একাধিক সংস্থা তদারকির কাজে নিয়োজিত। ভোক্তারা এ থেকে কেন সুফল পাচ্ছে না, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা উচিত। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে এখন মধ্যবিত্তও হিমশিম খাচ্ছে। কাজেই সীমিত ও প্রান্তিক আয়ের মানুষ এখন কতটা অসহায় হয়ে পড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। অতীতে আমরা দেখেছি, যারা নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করতে কারসাজি করে থাকে, তাদের কেউ প্রভাবশালী কোনো রাজনৈতিক নেতার প্রশ্রয় পেলে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সরকারের আমলে পদক্ষেপ নিতে দেরি করা হয়। দেশে বর্তমানে অরাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। ফলে এখন বাজার সিন্ডিকেট ভাঙা সহজ হলেও বাজারে গিয়ে ভোক্তাদের স্বস্তি মিলছে না। বিষয়টি দুঃখজনক। নিত্যপণ্যের দাম চড়া থাকলে গরিব মানুষ বাধ্য হয়ে খাওয়া কমিয়ে দেয়। কাজেই যেভাবেই হোক, নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা দূর করতে হবে। যেহেতু সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে সারা বছর চালের বাজার অস্থির থাকে, সেহেতু এ অপকর্মে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যারাই জড়িত থাকুক, সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।