প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০৬ নভেম্বর, ২০২৫
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা ভূমি অফিসে গত ছয় মাস ধরে কার্যত সেবা বন্ধ। জমি কেনাবেচা, জমাখারিজ, নামজারি বা ভূমি কর দিতে গিয়ে সেবাপ্রার্থীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। ভূমি অফিস এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। জমি কেনা-বেচা, উত্তরাধিকার নির্ধারণ বা কর পরিশোধ সবই নির্ভর করে সেখানকার কার্যক্রমের ওপর। সেখানে সেবা বন্ধ থাকা মানে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় জটিলতা সৃষ্টি হওয়া।
সংবাদ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ছয় মাস আগে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদলি হন। এরপর নতুন কর্মকর্তা যোগ দিলেও কিছুদিন পর মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যান। তার অনুপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকলেও, তিনি নানা দায়িত্বে ব্যস্ত থাকায় ভূমি অফিসে কার্যত কেউ নেই। এর ফলে সাধারণ মানুষকে সেবা পেতে ঘুরতে হচ্ছে বারবার। কখনও কাগজ জমা দিতে, কখনও নথি খুঁজতে, আবার কখনও কোনো কর্মকর্তার সাক্ষাৎ পেতে সেবাপ্রার্থীদেরকে হতে হচ্ছে গলদঘর্ম। অভিযোগ আরও আছে। ভূমি অফিসের কিছু কর্মচারী ও দালালচক্র টাকা ছাড়া কোনো কাজ করে না। কেউ প্রতিবাদ করলে হয়রানির শিকার হন। তাই বাধ্য হয়ে অনেকে টাকা দিয়েই সেবা নেন। এমনকি টাকা নেওয়ার পরও কাজ হয় না সময়মতো। এই দুর্নীতি নাগরিক ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। রাষ্ট্রের সেবামুখী ভাবমূর্তিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ভূমি অফিসের এমন অবস্থা শুধু চাটখিলেই নয়, দেশের অনেক জায়গাতেই এমনটা দেখা যায়। তবে এমন জনগুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে ছয় মাস ধরে সেবা বন্ধ থাকা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্থানীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, জমি-সম্পত্তির লেনদেন স্থবির হয়ে পড়বে।
আমরা বলতে চাই, চাটখিল ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তির অবসান ঘটাতে হবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ভূমি অফিসে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। দালালচক্রের দৌরাত্ম্য রোধে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে।