জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণবিষয়ক আইনের বিদ্যমান ‘জটিলতা’ দূর করতে সরকারের কাছে সংশোধন প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক কমিশন সভার পর নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, সংশোধনের প্রস্তাব তৈরির বিষয়ে আমরা যে কমিটি করেছি, সেই কমিটিতে আগামী সভায় নিজেদের প্রস্তুতি তুলে ধরতে বলা হয়েছে।
তিসি বলেন, ভোটার তালিকা আইন আরো পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটিতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে ইসিকে।
সানাউল্লাহ বলেন, সভায় বেশ কিছু বিষয় আলোচনা হয়েছে। মূলত আমরা কিছু কমিটি গঠন করেছি। ভোটার তালিকা আইন পর্যালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের মনে হয়, এটা নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন। সুতরাং সংশ্লিষ্ট কমিটিকে পর্যালোচনার জন্য আরো সময় দেয়া হয়েছে।
সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত নিয়ে সানাউল্লাহ বলেন, মানুষের মধ্যে শহরমুখী প্রবণতা রয়েছে। জনসংখ্যা ভিত্তি ধরলে শহরের দিকে আসন বাড়বে, অন্য এলাকায় কমবে। কমিশন মনে করে, এতে সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয় না।
নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণবিষয়ক আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর দুটি বিষয় সমস্যা সৃষ্টি করছে। মূলত জনসংখ্যায় গুরুত্ব দিয়ে এই সীমানা নির্ধারণটি করা হয়েছে। আমরা সীমানা নির্ধারণ করতে চাচ্ছি ভৌগোলিক আয়তন, অবস্থান ও সর্বশেষ জনশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে। তিনি বলেন, আইনের একটি উপধারায় ‘করণিক ত্রুটি’ রয়েছে। ফলে নির্বাচন কমিশন কিছুই করতে পারবে না। আসলে সেটা হওয়ার কথা নয়। আমরা সমস্যাটি তুলে ধরে সংশোধনের জন্য লিখব।
সীমানা নির্ধারণ আইনের বিষয়ে ইসি সুপারিশ আকারে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে আমাদের কমিশনে আসুক, তারপর কমিশন মনে করলে পাঠাবে। সীমানা নির্ধারণের জন্য ৪১টি আসনে এরই মধ্যে ২৪৮টি আবেদন জমা পড়েছে। এসব নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষা করছি আমরা। সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সংস্কার কমিশনে কী সুপারিশ আসে, সে বিষয়েও আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্যে ইসির আইন সংশোধন প্রস্তাব কোনো জটিলতা তৈরি করবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এখান থেকেও কোনো ইনপুট দেয়া হলে সেটা আরো কাজে দেবে। এখানে বিরোধ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংস্কার কমিশনের সুপারিশের কারণে কাজ বিলম্বিত হচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বলার চেষ্টা করছি, আমাদের দ্রুত এটা প্রয়োজন। আমরা পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্যে আছি। সংস্কারটা জনগণের দাবি। আমরাও এর বাইরে নই।