ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিএনপিতে বাড়ছে গ্রুপিং-কোন্দল

বিএনপিতে বাড়ছে গ্রুপিং-কোন্দল

বিএনপির তৃণমূলে বাড়ছে গ্রুপিং-কোন্দল। এরইমধ্যে প্রাণ গেছে অনেকের। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিএনপির বিভিন্ন গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের এসব ঘটনা বেড়েছে। এগুলোর পেছনে রয়েছে অর্থনৈতিক স্বার্থ। বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা নিজেদের আধিপত্য জানান দিতেই গ্রুপিং-কোন্দলের ঘটনা বাড়ছে। তাদের মতে, নির্বাচন এগিয়ে এলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আরও বাড়বে। নির্বাচন নিয়ে তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে চলে যাবে। কারণ প্রত্যেকেরই নিজস্ব বলয় আছে। অনুগত লোকেরা আছে। তারা সবাই প্রার্থী হতে চাইবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সংঘাত-সহিংসতা হচ্ছে না, সেটা আমরা বলব না। কিন্তু দেখতে হবে এটাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে কি না। জড়িতদের বহিষ্কার করা হয়েছে, পদ স্থগিত করা হচ্ছে, শোকজ করা হচ্ছে। জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলে কেউ এখান থেকে বাদ যাচ্ছে না। এই ধরনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণ-সাপেক্ষে জেলা বা থানা পর্যায়ের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি করা হয়েছে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা। এভাবে প্রায় ৭ হাজার নেতাকর্মীকে ব্যবস্থার আওতায় আনার কথা জানান তিনি।

সূত্রমতে, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সামলানো দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে বেশকিছু নির্দেশনা দেন বিএনপির হাইকমান্ড। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশেও থামানো যাচ্ছে না বিরোধ ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত। নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সভা-সমাবেশসহ জনবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে জনগণের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। জনগণকে সম্পৃক্ত করে এসব কর্মসূচিও পালন করছে নেতাকর্মীরা। একদিকে যেমন এসব কর্মসূচি পালন হচ্ছে, অন্যদিকে অবৈধ দখল এবং চাঁদাবাজির কারণে দলটির ইমেজ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। যদিও এসব নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থানে রয়েছেন দলটির হাইকমান্ড। এরই মধ্যে দলের উচ্চপর্যায় থেকে নানান নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার অপরাধে সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার এবং অনেকের দলীয় পদ স্থগিত ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলমান আছে। অনেক ক্ষেত্রে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূলের বিভিন্ন কমিটি। এরপরও থেমে নেই দখল, চাঁদাবাজি ও হানাহানি। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও দলের অন্তর্কোন্দলে সংঘাতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ঘটছে অভ্যন্তরীণ সহিংসতার ঘটনাও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রের কড়াকড়ি আমলে নিচ্ছে না তৃণমূলের উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীদের একাংশ। তাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে ইমেজ সংকটে পড়েছেন বিএনপির অনেক নেতা।

জানা গেছে, পদপদবি, কমিটি গঠন, দখল, চাঁদাবাজি এবং এলাকায় প্রভাব বিস্তার কেন্দ্র করে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে দলীয় নেতাকর্মীরও মৃত্যু হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ, আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি, দখলবাজি কেন্দ্র করে হামলা-সংঘর্ষে অনেক দলীয় নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। কোনোভাবেই থামছে না অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও গ্রুপিং।

বিএনপির চলমান হামলা সংঘর্ষসহ নেতিবাচক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, একদল লোক দলের অনেক বদনাম করছে। অপকর্ম, চাঁদাবাজি ও দুষ্কর্ম করে তারা, চাপিয়ে দেয় বিএনপির ওপর। এ সমস্ত চাঁদাবাজকে প্রতিরোধ করতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বারবার বলেছেন, ‘যদি জনগণের মন থেকে উঠে যাও, তাহলে আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে তার চেয়ে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। সাবধান থাকবেন। দুই একজন লোকের জন্য আমার সমস্ত দল বা দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের গায়ে কালিমা লিপ্ত হবে, এটা হতে দেওয়া যাবে না। যদি কোনো চাঁদাবাজ ঢুকে পড়ে কিংবা আসে ওইসব সুযোগ সন্ধানী হাইব্রিডকে চিহ্নিত করে দল থেকে বের করে দেন অথবা পুলিশকে সোপর্দ করেন। কোনো অপকর্মকারী, কোনো দুষ্কৃতকারী ও চাঁদাবাজির জায়গা বিএনপিতে নেই, হবে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গত ১৭ বছরে আমাদের অনেক নেতাকর্মী জেলে গেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে কিন্তু এখন বিশৃঙ্খলায় জড়ালে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনো ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দল থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে। এমন বিশৃঙ্খলা আসছে নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানান তিনি। শীর্ষ এই নেতার মতে, আমরা যেখানে প্রতিনিয়ত প্রতিটি ঘটনার পর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি, সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে বিএনপিতে কেউ অপরাধ করলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। অবশ্যই আমরা বিশৃঙ্খলা বন্ধ করব। হয়তো কিছুটা সময় লাগবে।

বিএনপির এক যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিরোধ সংঘাত নিয়ন্ত্রণ ও শূন্যের কোঠায় আনতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তৃণমূল পুনর্গঠন ও যত দ্রুত সম্ভব নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে।

বিএনপির বিভাগীয় এক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির মতো একটি বড় দলে গ্রুপিং ছিল, আছে এবং থাকবে। প্রতিযোগিতাও থাকবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা দীর্ঘ ১৬ বছর নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছেন। তাদের ন্যায্যতা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তো থাকবেই। আর দল থেকে বলা হয়েছে বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে। তাই বলে দলের গ্রুপিংয়ের কারণে কোনো সংঘর্ষ, প্রাণহানি এসব মেনে নেওয়া হবে না। বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সূত্রমতে, বিএনপির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে হুঁশিয়ারি এবং দলীয় অ্যাকশনও কাজে আসছে না। অভিযোগ পাওয়া গেছে, ‘সুবিধাবাদী’ (নয়া বিএনপি) কিছু নেতাকর্মী এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তারাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। দখল, চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যের অসংখ্য অভিযোগ আসছে কেন্দ্রীয় দপ্তরে। ফলে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভার পড়ার আশঙ্কা করছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। অবশ্য কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এসব অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও আসছে বিএনপি নেতাদের কাছে।

সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক-সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি বৈঠকে এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। ওই বৈঠকে তারেক রহমান দলীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, দলকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, কোনো বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা যাবে না। তিনি যত বড় ত্যাগী নেতা হোন, যত মামলা থাকুক কিংবা যতই জেল-জুলুমের শিকার হোন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের আইনের হাতে তুলে দিতে হবে।

বড় দল হিসাবে একেকটি আসনে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা রয়েছেন। কিছু কিছু এলাকায় এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং ও কোন্দল রয়েছে। এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি আসনে একাধিক নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। কিন্তু এ নিয়ে যেন কোনো দ্বন্দ্ব বা গ্রুপিং না হয়। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ঐক্যবদ্ধভাবে একই প্ল্যাটফর্ম থেকে দলের কর্মসূচি সফল করবেন। তা না হলে কারও বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী বা অপরাধমূলক কাজের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান জিরো টলারেন্স। দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিংবা অসদাচরণ করলেই সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, দলের নামে যে কেউ যে কোনো ধরনের অনৈতিক, অবৈধ, সন্ত্রাসী ও সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড করবে, সে রেহাই পাবে না। আমরা তাৎক্ষণিক তদন্ত করে এবং ভিডিও-অডিও- সবকিছু পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় সে দায়ী তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করিনি, করছি না, সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা বলেন, কোনো ধরনের সংঘাতের রাজনীতি চায় না বিএনপি। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে চায় তাদের বিষয়ে সব পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক যথেষ্ট সজাগ। ভোটের দাবিতে আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর রাজপথে আন্দোলন করে আসছি, এখনও আন্দোলনে আছি। এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব। দল ও সংগঠন শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে সবকিছু মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে বিএনপি যা যা করার দরকার তাই-ই করবে।’

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাড়ে ১৫ বছরের সুষ্ঠু ভোটের দাবি ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মাঠে না থাকলেও শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর সুবিধাবাদী বিএনপি নামধারী নেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। দলটির বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার নেপথ্যেও তারা কাজ করছে। তাদের সুবিধাবাদী আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

কেন্দ্রীয় নেতাদের মতো তৃণমূলের নেতাদের অভিযোগ একই। তারা বলছেন, যারা বিগত ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে দেশে ছিলেন না বা আত্মগোপনে ছিলেন, তারা ৫ আগস্টের পর দেশে এসে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন। তাদের এমন অপকর্মের কারণে সাধারণ মানুষের কাছে দলের সম্মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা।

এ ছাড়া অনেক নেতা সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চললেও এখন নতুন করে বিএনপি ও দলটির সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদে আসীন হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলেও এখন সুসময়ে দলে নিজের আধিপত্য বিস্তার করছে। তাদের আধিপত্য বিস্তারে কোণঠাসা হচ্ছেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

অভিযোগ রয়েছে, দেশের বেশিরভাগ জেলায় গত ১৫ বছরে আওয়ামী শাসনামলে বিভিন্ন অপকর্ম ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মীও আত্মগোপনে কিংবা এলাকা থেকে দূরে রয়েছেন। ফলে সব অপকর্ম ও মাদকদ্রব্যের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিএনপিতে সুযোগ সন্ধানী দলীয় পরিচয় ব্যবহার করা লোকগুলো।

বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গত ১৫ বছরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীরা ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ন্ত্রণ নিতে বিভিন্ন অপকর্মে নিজেদের যুক্ত করছেন। বিশেষ করে কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে এলাকায় মাদক নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। তাদের এমন অপকর্মের জন্য এলাকার মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন দলটির ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, সারা দেশে যেখানে বিশৃঙ্খলার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে এবং অভিযোগ আসছে, সেখানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দলের হাইকমান্ড কেন্দ্র থেকে তৃণমূল, যেখানে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে সেখানেই ব্যবস্থা নিচ্ছে। দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে একটি মেসেজ দেওয়া আছে, যেখানে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সুবিধাভোগীরা দলের মধ্য বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুষ্ট ও সুবিধাভোগীদের দলে কোনো জায়গা নেই। সমাজে দীর্ঘদিনের যে পচন, তা রোধ করতে একটু সময় প্রয়োজন। আশা করি ধীরে ধীরে বিশৃঙ্খলা কমে আসবে। কারণ আমরা যেমন বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি, তেমনি আইনগত ব্যবস্থাও নিচ্ছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত