ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

টিউলিপের ২ রেহানার ৭ ও হাসিনার ৫ বছর কারাদণ্ড

টিউলিপের ২ রেহানার ৭ ও হাসিনার ৫ বছর কারাদণ্ড

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের ২ বছর, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৫ বছর, তার বোন শেখ রেহানার ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি টিউলিপ সিদ্দিককে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও শেখ রেহানাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই মামলার অন্য ১৪ আসামিকে ৫ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ রেহানাকে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম রায় ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাটি করেছিল গত ১৩ জানুয়ারি। মামলার রায় ঘোষণার সময় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও স্কাই নিউজের সাংবাদিকেরা আদালত চত্বরে ছিলেন। যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানও ছিলেন সেখানে। দুদকের অভিযোগ, টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির এমপির ক্ষমতা ব্যবহার করে মা শেখ রেহানা, বোন আজমিনা সিদ্দিক ও ভাই রাদওয়ান মুজিবের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেন। তিনজনই পূর্বাচলে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন। তবে এ মামলায় শুধু রেহানার প্লট পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। যে কারণে এ মামলায় আজমিনা ও রাদওয়ানকে আসামি করেনি দুদক। দুজনকে অন্য দুটি মামলায় আসামি করেছে সংস্থাটি।

হাসিনা, রেহানা ও টিউলিপ ছাড়া এই মামলার অন্য ১৪ আসামি হলেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক চার সদস্য—মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন ও মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী; রাজউকের সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। ১৭ আসামির মধ্যে খুরশীদ আলম কারাগারে আছেন।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ ওঠে। একপর্যায়ে টিউলিপ সিদ্দিকের নামও আসে। দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে বাংলাদেশে তদন্ত শুরুর পর সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) পদ থেকে গত ১৪ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন তিনি।

প্রত্যাশা অনুযায়ী মামলার রায় হয়নি- দুদকের আইনজীবী : রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির একটি মামলায় রায়ের পর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খান মো. মঈনুল হাসান বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় হয়নি। রায়ের পর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দুদকের আইনজীবী খান মো. মঈনুল হাসান বলেন, ‘আমরা দুদকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে রায়ের ব্যাপারে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাব। আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী রায় হয় নাই। আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি, যাবজ্জীবন চেয়েছিলাম।’

টিউলিপসহ অন্য আসামিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে মঈনুল হাসান বলেন, আসামিরা যেসব দেশে পলাতক আছেন, সেসব দেশ থেকে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হবে। টিউলিপ একদিকে বাংলাদেশি নাগরিক, অন্যদিকে ব্রিটিশ নাগরিক। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অবগত করাবেন। বাংলাদেশি আইনে যে প্রক্রিয়াগুলো আছে, তাঁরা সেগুলো সম্পন্ন করবেন সরকারের মাধ্যমে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত