
দেশে পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে সীমিত পরিসরে আমদানির অনুমতি দিচ্ছে সরকার। এমন খবরে দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দামে নিম্নগতি লক্ষ্য করা গেছে। এক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে মানভেদে ২৫-৩০ টাকা। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সরেজমিন দেখা গেছে, শনিবার (৬ ডিসেম্বর) যে পেঁয়াজ পাইকারিতে ১১০-১২৫ টাকা বিক্রি হয়েছে তা ৭০-৯০ টাকায় ঠেকেছে। আড়তে সরবরাহ বাড়ছে নতুন মৌসুমের মুড়িকাটা পেঁয়াজ। দাম আরও কমবে আশায় খুচরা বিক্রেতারা পেঁয়াজ কিনছেন কম।
খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের বড় বিপণি হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, পেঁয়াজ আমদানি অনুমতি দিচ্ছে এ খবর শুনেই পেঁয়াজের দাম ২০-৩০ টাকা কমে গেছে। আড়তে দেশি পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা এবং মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এতে চাষিদের কাছ থেকে বেশি দামে যেসব বেপারী পেঁয়াজ কিনেছিলেন তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। তিনি আরও জানান, সপ্তাহখানেকের মধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে বাজারে। শনিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানির জন্য আইপি খুলে দেওয়া হবে। প্রতিদিন ৫০টি আইপি অনুমোদন হবে। সকাল ১০টায় সার্ভার খুলে দেওয়া হবে। ৫০টি আবেদন পূর্ণ হলে সার্ভার বন্ধ হয়ে যাবে। একজন আমদানিকারক সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন পাবেন। তবে যেসব আবেদনকারী ১ আগস্ট আমদানির জন্য আবেদন করেছিলেন, তারাই অনুমোদন পাবেন। একজন আমদানিকারক শুধু একবারই অনুমোদন পাবেন। মোহাম্মদ জামাল হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ী বলেন, মেহেরপুর থেকে এক ট্রাক মুড়িকাটা পেঁয়াজ এনেছিলাম খাতুনগঞ্জের আড়তে। কেজিপ্রতি ৮৮-৯০ টাকায় বেশিরভাগ বিক্রি করে দিয়েছি। অল্পকিছু পেঁয়াজ অবিক্রীত আছে। এলসির পেঁয়াজ আসবে শুনে দাম পড়ে গেছে। এক মাসের জন্য হলেও আমদানি অব্যাহত থাকলে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বড় হবে। বেশি দামের আশায় অপরিপক্ব পেঁয়াজ বাজারে আনা হচ্ছে। এতে ওজন কমে যাচ্ছে। আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। আড়তদার সৃজন দাশ বলেন, দেশি পেঁয়াজ এখনও পরিপক্ব হয়নি। নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ গতকাল ১১০ টাকা বিক্রি করেছি, আজ ৮০ টাকায় ঠেকেছে। পুরোনো পেঁয়াজ গতকাল ১২৫-১৩০ টাকা বিক্রি করেছিলাম। আজ সেটি ১০০ টাকায় নেমে এসেছে। ভারতের এলসি পেঁয়াজ আসবে এমন খবরে দাম পড়ে গেছে। মেসার্স বাচা মিয়া সওদাগরের ম্যানেজার মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, রাজবাড়ী কুষ্টিয়ার ভালোমানের পেঁয়াজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ১২৫-১৩০ টাকা ছিল গতকাল। মেহেরপুরের মুড়িকাটা পেঁয়াজ মোটা (বড়) ১০০-১০৫ টাকা ছিল, আজ ৮০-৮৫ টাকা। গতকালের চেয়ে ২০-৩০ টাকা কমে গেছে হঠাৎ করে। আড়তে ক্রেতাও নেই। এদিকে, আড়তে পেঁয়াজের দরপতন হলেও খুচরায় প্রভাব পড়ছে ধীরগতিতে। মুদির দোকানগুলোতে এখনও ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। তাদের যুক্তি বেশি দামে কিনেছেন, তাই দাম বেশি। তবে ভাসমান বিক্রেতা ও রিকশাভ্যানে পেঁয়াজের দাম কমছে। সামনে দাম আরও কমার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।