ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধসে নিহত তিন শতাধিক

পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধসে নিহত তিন শতাধিক

অতি ভারী বৃষ্টিতে পাকিস্তানে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস এবং বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় শুধু খাইবার পাখতুনখোয়া (কেপি) প্রদেশেই ৩০৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের বেশিরভাগই পানিতে ভেসে অথবা ভবন ধসে মারা গেছেন। খবর জিও নিউজের।

প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) গতকাল শনিবার জানিয়েছে, কেপিতে মৃতদের মধ্যে ২৭৯ জন পুরুষ, ১৫ জন মহিলা এবং ১৩ জন শিশু রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বন্যায় মোট ৭৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৬৩টি বাড়ি আংশিকভাবে ধ্বংস হয়েছে এবং ১১টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে।

বৃষ্টিপাত ২১ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়ছে পিডিএমএ। এছাড়া, বুনেরে-বাজাউর, তোরঘর, মানসেহরা, শাংলা এবং অন্যান্য এলাকায় বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনায় ১৮৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পিডিএমএ জানিয়েছে, বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর জন্য ৫০০ মিলিয়ন রুপির ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে বুনেরের জন্য ১৫ মিলিয়ন রুপি এবং বাজাউর, বটগ্রাম এবং মানসেহরা প্রতিটির জন্য ১০ মিলিয়ন রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। সোয়াতসহ এসব জেলাকে কেপি সরকার ‘দুর্যোগকবলিত এলাকা’ ঘোষণা করেছে। প্রাদেশিক উদ্ধার সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, প্রায় ২,০০০ উদ্ধারকর্মী ধ্বংসস্তূপ থেকে লাশ উদ্ধার এবং নয়টি ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োজিত রয়েছেন। কেপির উদ্ধার সংস্থার মুখপাত্র বিলাল আহমেদ ফৈজি এএফপিকে বলেন, ‘ভারি বৃষ্টিপাত, বেশ কয়েকটি এলাকায় ভূমিধস এবং রাস্তাঘাট ভেসে যাওয়ার কারণে ত্রাণ সরবরাহে, বিশেষ করে ভারী যন্ত্রপাতি এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিবহনে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। ’

এদিকে, নিরাপত্তা সূত্র অনুসারে, সেনাবাহিনী প্রধান (সিওএএস) ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য বিশেষ নির্দেশনাও জারি করেছেন। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ এনডিএমএকে তাঁবু, ওষুধ, খাদ্য সরবরাহ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী তাৎক্ষণিকভাবে কেপিতে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। কোনো প্রয়োজন ছাড়া বন্যার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় না যেতে সাধারণ মানুষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া কিছু অঞ্চলকে দুর্যোগ জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর জানিয়েছেন, আফগান সীমান্তবর্তী বাজুরে যাওয়ার সময় একটি এমণ্ড১৭ হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। এরআগে গত বৃহস্পতিবার ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে গতকাল মেঘ বিস্ফোরণে অন্তত ৬০ জন নিহত হন। এতে আহত হন আরও ২০০ জন। মেঘ বিস্ফোরণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা সামনের সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। যেগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে অন্তত ৫০০ জন আটকে পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত