
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিপাইনের সেবু প্রদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) জানায়, কেউ নিখোঁজ নেই। আহত ও বাস্তুচ্যুতদের সহায়তায় মনোযোগ স্থানান্তর করা হচ্ছে। এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজদেরও হিসাব মিলে গেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে কেন্দ্রীয় দ্বীপ সেবুর উপকূলে ৬.৯ মাত্রার আঘাত হানা এ ভূমিকম্পে ২০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুর্যোগ এলাকায় সফর করেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। ৬০০টি ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ি এবং আরও হাজারো পরিবার আফটারশকের কারণে ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছে, তাদের জন্য একটি ‘টেন্ট সিটি’ তৈরি করা হবে। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা একটি ‘টেন্ট সিটি’ তৈরি করব যা দ্রুত স্থাপন করা যাবে এবং মানুষকে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করবে। ভূমিকম্পে প্রায় ৯০ হাজার মানুষের শহর বোগো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই অঞ্চল সফরকালে তিনি সেখানকার আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করব যে খাদ্য সরবরাহ, পানি সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ থাকবে- প্রয়োজনে জেনারেটর সরবরাহ করা হবে। জনগণের যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তা দিতে সক্ষম হব।’ যদিও ব্যাপক অবকাঠামোগত ক্ষতির কারণে ত্রাণ কার্যক্রম জটিল হয়ে উঠেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। টানা ভারী বৃষ্টি ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা উদ্ধার তৎপরতায় আরও বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
সরকার জানিয়েছে, ভূমিকম্পে উত্তর সেবুতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে, যাদের অনেকেই খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছে। আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের অনুমান, ৪২টি কমিউনিটিতে ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষের ঘরবাড়ি পুনর্র্নিমাণ ও জীবিকা পুনরুদ্ধারের জন্য সহায়তা প্রয়োজন হবে। মার্কোস প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বোগো শহরের ঘর হারানো প্রতিটি পরিবারকে ১০ হাজার পেসো (১৭১ ডলার) করে দেওয়া হবে। ফিলিপাইন প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অফ ফায়ারে’ অবস্থিত- যা এক ভূমিকম্পপ্রবণ আগ্নেয়গিরির বলয়, যা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে শুরু করে রাশিয়ার দূর প্রাচ্য পর্যন্ত বিস্তৃত। দেশটিতে প্রতি বছর আটশ’র বেশি ভূমিকম্প ঘটে।