
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জি মেলোনি গত মঙ্গলবার জানিয়েছেন, গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে ‘গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে’ তিনিসহ তার দুই মন্ত্রীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে কাদের পক্ষ থেকে ওই মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলেননি তিনি। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম রাইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেলোনি বলেন, মামলায় নাম এসেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তায়ানি, প্রতিরক্ষা শিল্প প্রতিষ্ঠান লিওনার্দোর প্রধান রবার্তো চিনগোলানিক। বিশ্বে বা ইতিহাসেই এমন নজির আর নেই বলে দাবি করেন তিনি। অবশ্য কীসের মাপকাঠিতে তিনি এই দাবি করলেন, সেটিও স্পষ্ট ছিল না। গত এক সপ্তাহ ধরে ইতালির বিভিন্ন শহরে গাজায় হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে, যেখানে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নিচ্ছেন। অনেকে সরাসরি মেলোনির প্রতিও ক্ষোভ ঝাড়ছেন।
ইতালির ক্ষমতাসীন ডানপন্থি সরকার দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত হলেও সাম্প্রতিক সময়ে তারা গাজায় ইসরায়েলি হামলা ঘিরে ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ সমালোচনা করেছে। তবু ইতালি এখনও ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেনি, কিংবা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়নি। ইসরায়েলের অভিযান শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাসের সশস্ত্র সদস্যরা দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে বন্দি করে নিয়ে যায়।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি পাল্টা আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ইসরায়েল অবশ্য গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনকে ঘিরে ইতালি সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক ও বিস্ময়কর’ উল্লেখ করেন মেলানি।
তিনি বলেন, ইতালি ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলে কোনো নতুন অস্ত্রের সরবরাহ অনুমোদন করেনি। প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান লিওনার্দোর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংস্থার প্রধান চিনগোলানি এরমধ্যেই এই অভিযোগকে ‘গুরুতর ষড়যন্ত্র’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।