
যুদ্ধবিরতির পরেও গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলের বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরেও অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ২৩৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। খবর আল জাজিরার।
এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় এক কিশোরসহ দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে গাজা শহরে তল্লাশি অভিযানের পর আরও তিন বন্দির লাশ হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এরআগে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে আরও ৩০ ফিলিস্তিনির লাশ ফেরত দেয় ইসরায়েল। এদের মধ্যে অনেকের দেহেই নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের লাশ ফেরত পাঠানো হয়।
অক্টোবরের শুরুর দিকে স্বাক্ষরিত বন্দি-বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে নিহত ফিলিস্তিনি বন্দিদের লাশ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সর্বশেষ হস্তান্তরের পর মোট মৃত দেহের সংখ্যা ২২৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
এতে বলা হয়েছে যে, মেডিকেল টিমগুলো স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকল অনুসারে লাশগুলো শনাক্ত করছে এবং নথিভুক্ত করার আগে পরিবারগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। বিভিন্ন চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, বন্দিদের মধ্যে অনেক লাশই নির্যাতনের চিহ্ন ছিল, অনেকের চোখ বাঁধা এবং হাতকড়া পরানো ছিল। অনেকের দেহ পচে গেছে বা পুড়ে গেছে, আবার অন্যদের দেহে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বা দাঁত নেই।
ইসরায়েল হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে কারাগারে আটকে রেখেছে। অনেকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের না করেই আটকে রাখা হয়েছে। ইসরায়েল তাদের কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের নির্যাতন করে বলে বছরের পর বছর ধরেই খবর প্রচলিত এবং গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তা আরও বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের জন্য চুক্তির আওতায় হামাস ২০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার নগর কেন্দ্রগুলো থেকে আংশিক প্রত্যাহারও সম্পন্ন করেছে। হামাসের হামলার জবাবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদার বাহিনীর আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৮ হাজার ৮৫৮ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৪ জন আহত হয়েছে।