ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৮ আশ্বিন ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

সাবেক সহকারী মুফতি, গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসা টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ
মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ

প্রশ্ন : কবরে তিনটি প্রশ্ন মূলত কারা দিতে পারবে? শুধু মোমিনরাই উত্তর দিতে পারবে নাকি ফাসেকরাও পারবে?

উত্তর : শুধু কাফেররা কবরের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না। মুসলমানরা দিতে পারবে; যদিও সে ফাসেক হয়। ফাসেক মুসলিম উত্তর দিতে পারলেও কৃত গোনাহের কারণে কবরে শাস্তি হতে পারে। (আল-ফাতাওয়াল হাদিসিয়্যা : ৭)।

প্রশ্ন : সমাজে প্রচলন আছে, মৃতের জন্য ৭০ হাজার বার কালিমায়ে শাহাদত পড়লে সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পায়। এ কারণে কেউ কেউ নিজ জীবদ্দশায় এ উদ্দেশ্যে ৭০ হাজার বার কালিমা পড়ে। এ আমল করলে কি জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?

উত্তর : প্রশ্নোক্ত কথাটি সঠিক নয়; বরং এটি লোকমুখে প্রচলিত কথা। এর কোনো দালিলিক ভিত্তি নেই। শায়খ ইবনে তাইমিয়া (রহ.)-কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি বিশুদ্ধ বা দুর্বল কোনো সনদেই বর্ণিত নেই।’ (মাজমুউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়া : ২৪/৩২৩)। প্রকাশ থাকে যে, কালিমায়ে তাইয়িবা পাঠ করা অনেক বড় সওয়াবের কাজ। একাধিক হাদিসে এ কালিমা পাঠের বহু ফজিলত এসেছে। এক হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ইখলাসের সঙ্গে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করবে, সে জান্নাতে যাবে।’ (মুসনাদে আহমদ : ১৯৬৮৯, শরহু মুশকিলিল আসার : ৪০০৩)। তাই নিজে কালিমায়ে তাইয়িবা পাঠ করা কিংবা কোনো মৃতব্যক্তির ঈসালে সওয়াবের জন্য পাঠ করা ভালো কাজ। কিন্তু প্রশ্নোক্ত সংখ্যা ও পদ্ধতির কোনো দালিলিক ভিত্তি নেই। তাই এ পদ্ধতি বর্জনীয়।

প্রশ্ন : আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি দাড়ি রাখার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে গিয়ে বলল, ‘আমি যদি আর দাড়ি কাটি, তাহলে আমি মুসলমান নই।’ পরে সে দাড়ি কেটেছে। এখন তার বিধান কী? তার ঈমান ও বৈবাহিক সম্পর্কের কী হবে? কেউ কেউ বলেন, তার এ কথা কোনো হলফই হয়নি। কারণ, দাড়ি যে একেবারে কাটা যায় না, এমন তো নয়। একমুষ্ঠির বেশি হলে তো কাটা যায়। উল্লেখ্য, তার উদ্দেশ্য ছিল দাড়ি যত বড়ই হোক মোটেই কাটবে না। একমুষ্ঠির বেশি হলে কাটা যায়, এটা তার জানা ছিল না।

উত্তর : প্রশ্নোক্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করার দ্বারা ওই ব্যক্তির ঈমান নষ্ট হয়নি এবং বিয়েও ভাঙেনি। তবে এ কথা বলার দ্বারা দাড়ি না কাটার হলফ হয়েছে। অতএব, হলফ ভাঙার কারণে তার ওপর কসমের কাফফারা আদায় করা ওয়াজিব। যারা বলেছে, একমুষ্ঠির বেশি হলে দাড়ি কাটা যায় বিধায় হলফ হবে না, তাদের কথা ঠিক নয়। কেননা, বৈধ কাজ না করার ওপরও হলফ হয়। আর কোনো অঙ্গীকারের ক্ষেত্রেও ‘আমি মুসলমান নই’ এমন কথা বলা মারাত্মক অন্যায় ও গোনাহ। অতএব, ওই কথা বলার কারণে তাকে তাওবা করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে : ৩/১৬, ফাতহুল কাদির : ৪/৩২৬, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ২/৫৪, আদ্দুররুল মুখতার : ৩/৭১৩, ৭১৭, ইলাউস সুনান : ১১/৩৫৮)।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত