ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গাজা-পরিকল্পনার পক্ষে সাফাই নেতানিয়াহুর

জাতিসংঘে তীব্র সমালোচনার মুখে ইসরায়েল

জাতিসংঘে তীব্র সমালোচনার মুখে ইসরায়েল

ফিলিস্তিনির গাজা সিটির ‘নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার’ ইসরায়েলি পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতেরা। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, এ পরিকল্পনাই যুদ্ধ শেষ করার ‘সবচেয়ে ভালো উপায়’। এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, পরিকল্পিত সামরিক অভিযান দ্রুত শুরু করা হবে। হামাসের হাত থেকে গাজাকে মুক্ত করা হবে। ইসরায়েল গাজাবাসীকে অনাহারে রেখেছে- এ অভিযোগ অস্বীকার করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, বরং গাজায় থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদেরই ‘ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে’ রাখা হচ্ছে।

এদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে ইসরায়েল তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। বৈঠকে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ অন্য দেশ সতর্ক করে বলে, ইসরায়েলের পরিকল্পনাটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ‘লঙ্ঘনের ঝুঁকি’ তৈরি করছে। পরিকল্পনাটি প্রত্যাহারের আহ্বান জানায় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, গ্রিস ও স্লোভেনিয়া। দেশগুলো বলেছে, এ পরিকল্পনা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির ক্ষেত্রে কোনো সহায়তা করবে না; বরং তাদের জীবনকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্যও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চীন বলেছে, গাজার জনগণের ওপর ‘সমষ্টিগত শাস্তি’ অগ্রহণযোগ্য। আর রাশিয়া বিচার-বিবেচনাহীনভাবে সংঘাত বৃদ্ধি নিয়ে সতর্ক করেছে।

জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ ইয়েনচা বৈঠকে বলেন, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে গাজায় নতুন একটি বিপর্যয় সৃষ্টি হবে, যা পুরো অঞ্চলে প্রভাব ফেলবে। আরও বাস্তুচ্যুতি, হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হবে। জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয়ের কর্মকর্তা রমেশ রাজাসিংহাম বলেন, গাজার খাদ্যসংকট এখন আর শুধু হুমকি নয়, এটি সরাসরি অনাহারে রূপ নিয়েছে। তবে বৈঠকে ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডরোথি শিয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিরলসভাবে জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধের অবসানে কাজ করছে। এ বৈঠক সেই প্রচেষ্টাকে অবমূল্যায়ন করছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, হামাস যদি জিম্মিদের ছেড়ে দেয়, তাহলে যুদ্ধ আজই শেষ হতে পারে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তারা এ বৈঠককে ব্যবহার করে ইসরায়েলকে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি গণহত্যার বিষয়টিকে স্পষ্টত মিথ্যা বলে দাবি করেন। গত রোববার নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, তিনি পরিকল্পনাটি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলজুড়ে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, এ পরিকল্পনা জিম্মিদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলছে। সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে গাজা সিটির অবশিষ্ট দুটি হামাস ঘাঁটি ও আল-মাওয়াসি এলাকার ঘাঁটি ধ্বংস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গাজায় সাহায্য বাড়াতে তিন দফা পরিকল্পনার কথা জানান নেতানিয়াহু। এরমধ্যে রয়েছে নিরাপদ করিডর স্থাপন, আকাশপথে সাহায্য পাঠানো বৃদ্ধি এবং বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত বিতরণকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত