ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮ শতাংশ মানুষ চায় স্বাধীন ফিলিস্তিন

যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮ শতাংশ মানুষ চায় স্বাধীন ফিলিস্তিন

যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, জাতিসংঘের সব দেশ ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। রয়টার্স/ইপসোসের নতুন এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে অংশ নেওয়া ৩৩ শতাংশ মার্কিন নাগরিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়ে একমত নন, আর ৯ শতাংশ কোনো উত্তর দেননি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ছয় দিন ধরে এই জরিপ চালানো হয়। গত সোমবার এই জরিপ শেষ হয়েছে। এর কিছুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বেড়েছে, বিশেষ করে যখন গাজায় অনাহারী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।

জরিপ চলাকালে আশা করা হচ্ছিল, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে পারে, যাতে কিছু বন্দি মুক্তি পায় এবং গাজায় মানবিক সহায়তা সহজে পৌঁছায়।

গত মঙ্গলবার তেল আবিবের দুই কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েল এখন হামাসের দেওয়া প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে, যেখানে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় আটক অর্ধেক ইসরায়েলিকে মুক্তির বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি ইউরোপীয় মিত্রদেশ জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সংকট ‘অকল্পনীয় মাত্রায়’ পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোও সতর্ক করেছে যে গাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বলেছে, ইসরায়েল গাজায় পর্যাপ্ত সরবরাহ ঢুকতে দিচ্ছে না। এতে ব্যাপক মানুষকে অনাহারে থাকতে হচ্ছে। তবে ইসরায়েল এই দায় অস্বীকার করে বলেছে, হামাস তাদের দেওয়া ত্রাণ চুরি করছে। হামাস অবশ্য ইসরায়েলের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জরিপে আরও দেখা গেছে, ৬৫ শতাংশ মার্কিন মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত গাজায় ক্ষুধার্ত মানুষকে সাহায্য করা। ২৮ শতাংশ এর সঙ্গে একমত নন। আর এদের মধ্যে ৪১ শতাংশ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের সমর্থক।

রয়টার্স/ইপসোসের এই অনলাইন জরিপে যুক্তরাষ্ট্রের ৪ হাজার ৪৪৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ অংশ নেন। জরিপের ফলে ২ শতাংশ ‘মার্জিন অব এরর’ থাকতে পারে।

গাজা দখলে ইসরায়েলি অভিযানের প্রথম ধাপ শুরু : গাজা সিটি দখল ও নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পিত স্থল অভিযানের ‘প্রাথমিক পদক্ষেপ’ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তারা ইতিমধ্যে গাজা উপত্যকার ওই শহরের উপকণ্ঠে অবস্থান নিয়েছে। এক ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র বলেন, মূল অভিযানের ক্ষেত্র তৈরির জন্য সেনারা এরই মধ্যে জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় অভিযান চালাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনার অনুমোদন দেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।

এ অভিযানে অংশ নিতে আগামী সেপ্টেম্বরের শুরুতে ৬০ হাজার সংরক্ষিত সেনা তলব করা হচ্ছে। তাদের রণাঙ্গনে লড়াইরত সেনাদের পরিবর্তে মোতায়েন করা হবে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে এবং নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নির্মম যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা ইসরায়েল এগিয়ে নিতে থাকায় সেখানকার লাখো বাসিন্দাকে দক্ষিণাঞ্চলে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে ইসরায়েলের অনেক মিত্র গাজা সিটি দখলের এ পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ সতর্ক করে বলেছেন, এ পরিকল্পনা ‘দুই জাতির জন্যই বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং গোটা অঞ্চলকে স্থায়ী যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে।’

আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি) বলেছে, নতুন করে বাস্তুচ্যুতি ও সহিংসতা বেড়ে গেলে গাজার ২১ লাখ মানুষের জন্য পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।

গত মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির পরোক্ষ আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকা দখলে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন বলেন, ২২ মাসের যুদ্ধে হামাস এখন ‘ক্ষতবিক্ষত ও বিধ্বস্ত’।

ডেফরিন বলেন, ‘আমরা গাজা সিটিতে হামাসের ওপর আরও গভীরভাবে আঘাত হানব। ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভস্থ ‘সন্ত্রাসী’ অবকাঠামো ধ্বংস করব এবং হামাসের ওপর জনগণের নির্ভরতা ছিন্ন করব।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত