ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নাফনদী থেকে ট্রলারসহ আরও ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

নাফনদী থেকে ট্রলারসহ আরও ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফনদী থেকে আবারও একটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নবাদি গোষ্ঠি আরাকান আর্মি। বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে টেকনাফে ফেরার পথে গতকাল শনিবার দুপুর দেড় টার দিকে শাহপরীরদ্বীফের নাইক্ষ্যংদিয়া সংলগ্ন নাফনদী থেকে এদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছেন, শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট ট্রলার মালিক সভাপতি গফুর আলম। ট্রলারটির মালিক শাহপরীরদ্বীপের সুলতান আহমদের ছেলে মো. ওসমান। এর ট্রলারটির নাম এফবি ওসমান। গফুর আলম জানান, আরাকান আর্মির সদস্যরা ধাওয়া করে অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে এই ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। বিষয়টি প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।

ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা হলেন- লাল মিয়ার ছেলে মো. আলি আহমদ, মোহাম্মদ রশিদের ছেলে মোহাম্মদ আমিন, মৃত আবদুল করিমের ছেলে ফজল করিম, আবদুল মজিদের ছেলে কেফায়েত উল্লাহ, শামসুল আলমের ছেলে সাইফুল ইসলাম, মৃত নুর বশরের ছেলে সাদ্দাম হোসেন, মুস্তাক আহমদের ছেলে মো. রাসেল, আব্দুর রহমানের ছেলে মো. সোয়াইব, নুরু ইসলামের ছেলে আরিফ উল্লাহ, ফরিদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ মোস্তাক, নুর আহমদের ছেলে নুরুল আমিন এবং মোহাম্মদ আমিনের ছেলে মো. আরফান। তাদের সবারই বাড়ি শাহপরীরদ্বীপের বিভিন্ন এলাকায়। এ প্রসঙ্গে জানার জন্য কোস্ট গার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডারের সরকারি মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ না করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন তবে পরিবারের পক্ষ থেকে তাদেরকে অবহিত করা হয়নি। এ ব্যাপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, জেলে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শাহপরীর দ্বীপ কোস্ট গার্ড ও স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি এবং সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এর আগে দুই দফায় ধরে নিয়ে যাওয়া ৭ জেলে এখনও আরাকান আর্মির হাতে জিন্মি রয়েছে। এদের এখনও ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। যার মধ্যে ১২ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকা থেকে নৌকাসহ পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।

জেলেরা হলেন- টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহ পরীর দ্বীপের মো. আলী আহমদ ছেলে মো. ইলিয়াস, মো. ইলিয়াস ছেলে আক্কাল আলী, মো. ইলিয়াস ছেলে মো. নুর হোসেন, কালু মিয়ার ছেলে সাবের হোসেন ও মোহাম্মদ নুর হোসেনের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম। তারা সবাই সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এর আগে গত ৫ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়া সংলগ্ন নাফনদীর জলসীমানা থেকে বিহিঙ্গি জাল ও নৌকাসহ টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার মো. তৈয়বের ছেলে উসমান গনি (৩২) ও মো হোসেনের ছেলে আব্দুল করিম (৪০) ধরে নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এই পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আরাকান আর্মি ২২৩ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এরমধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জন জেলে এবং ২৭টি ট্রলার-নৌকা ফেরত আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত