ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার ধ্বংসাবশেষ সরাচ্ছে ইরান

পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার ধ্বংসাবশেষ সরাচ্ছে ইরান

তেহরানের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত মোজদেহ (লাভিসান-২ নামেও পরিচিত) নামের একটি পরমাণুবিষয়ক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার পর দ্রুত ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলছে ইরান। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি জানিয়েছে, এভাবে প্রমাণ মুছে ফেলা হলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাব্য কার্যক্রমের কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। গবেষণা সংস্থাটির প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, ইরান দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি অভিযুক্ত গোপন পারমাণবিক গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রমাণ গোপনের অংশ হতে পারে। এই ইনস্টিটিউট একটি স্বাধীন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান। তারা বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার ঠেকাতে গবেষণামূলক কাজ করে থাকে। ডেভিড অলব্রাইট প্রতিষ্ঠানটির প্রধান। তিনি একসময় জাতিসংঘের পারমাণবিক পরিদর্শক ছিলেন।

বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জাতিসংঘে ইরানের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে ইরান বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করে এসেছে। দেশটির দাবি, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, অস্ত্র তৈরির জন্য নয়। তেহরানের মোজদেহ পরমাণুবিষয়ক স্থাপনা নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠানটি এমন এক সময়ে এ তথ্য জানিয়েছে, যখন জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি সংস্থা তেহরানে পরিদর্শন কার্যক্রম আবারও শুরু করার বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। গত ১৩ থেকে ২৪ জুন ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এবং ২২ জুন ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর এ আলোচনাপ্রক্রিয়া থমকে যায়।

চারজন কূটনীতিক বলেছেন, ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আবারও আরোপ করার বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। এসব দেশের অভিযোগ, ২০১৫ সালে সই করা পারমাণবিক চুক্তি ভঙ্গ করেছে ইরান। দেশটিকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কার্যক্রম থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে ওই চুক্তি করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি ওয়াশিংটনে দুই দিনের সফর শেষে গত বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, আইন অনুযায়ী পারমাণবিক স্থাপনায় আবারও পরিদর্শনের সুযোগ দিতে ইরান বাধ্য। পরিদর্শন কার্যক্রম যত দ্রুত সম্ভব শুরু করা উচিত। ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটির প্রতিবেদনটি বলছে, মোজদেহ পরমাণুবিষয়ক স্থাপনায় (যা লাভিসান-২ নামেও পরিচিত) গত ১৮ জুন দুই দফা বোমাবর্ষণ করেছিল ইসরায়েল। সেদিন ইসরায়েলি বাহিনী ইরানজুড়ে কয়েকশ’ স্থাপনায় হামলা করেছিল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মোজদেহের ওপর প্রথম দফার ইসরায়েলি হামলায় কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর একটি ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্লাইড ফিজিকসের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আরেকটির সঙ্গে শহীদ করিমি গ্রুপের যোগসূত্র ছিল বলে সন্দেহ করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরক-সম্পর্কিত প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রুপটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় দফার ইসরায়েলি হামলায় ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্লাইড ফিজিকস ভবন ধ্বংস হয়ে যায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত