
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মহামান্য হাইকোর্টের রায় হাতে পেলেই বাঁকখালী নদী দখলমুক্তকরণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া স্থায়ীভাবে ড্রেজার বেইজ স্থাপনসহ বাঁকখালী নদীকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, বাঁকখালী নদী দূষণমুক্ত রাখতে হোটেল মোটেলগুলোর বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর দখলদারদের সমন্বিত তালিকা করে উচ্ছেদ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল শনিবার কক্সবাজার সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে ‘হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক বাঁকখালী নদী দখলমুক্তকরণের লক্ষে বিশেষ সমন্বয় সভা’ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন তিনি।
সভায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিজাম উদ্দিন আহমেদসহ জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২৪ আগস্ট কক্সবাজারের প্রধান নদী বাঁকখালীর সীমানায় থাকা সব দখলদারের তালিকা তৈরি করে আগামী চার মাসের মধ্যে উচ্ছেদ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে নদীটিকে আগামী ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হিসেবে ঘোষণা ও সে মোতাবেক ব্যবস্থাপনা নেওয়ারও নির্দেশ দেন আদালত। ওই নির্দেশনার এক সপ্তাহের মধ্যেই কক্সবাজার সফর করলেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা।
হাইকোর্টের ওই রায়ে বলা হয়, বাঁকখালী নদীর বর্তমান প্রবাহ এবং আরএস জরিপের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণপূর্বক নদীটিকে সংরক্ষণ করতে হবে। নদীর সীমানায় বিদ্যমান দখলদারদের তালিকা প্রস্তুত করে আগামী ৪ মাসের মধ্যে তা উচ্ছেদের ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি পূর্বে প্রদত্ত রুল চূড়ান্তকরণের মাধ্যমে নদী এবং নদী সংলগ্ন এলাকা ভিন্ন উদ্দেশে ইজারা প্রদান করা থেকে বিরত থাকতে, নদী এলাকার ম্যানগ্রোভ বন ফিরিয়ে আনতে এবং নদী এলাকায় ইতোপূর্বে প্রদান করা সব ইজারা বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
রায় অনুযায়ী, নদীটির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়মিত তদারকির স্বার্থে মামলাটিকে আদালত চলমান মামলা হিসেবে ঘোষণা করে প্রতি ৬ মাস পর পর অর্থাৎ প্রতিবছর জানুয়ারি ও জুলাই মাসে উল্লিখিত নির্দেশ প্রতিপালন প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা একটি মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী জিনাত হক এবং বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দীকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ এ বায় দেন।