
ভোট চুরি তথা ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে ভারতের রাজনীতি এখন সরগরম। এর মধ্যেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, ভোট কারচুপির এমন প্রমাণ তার হাতে আছে যা প্রকাশ হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না।
এমনকি ভোট চুরির অভিযোগ প্রমাণে ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাটানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন লোকসভার বিরোধীদলীয় এই নেতা। গত সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রল ইন।
রাহুল গান্ধী বলেছেন, তার দল শিগগিরই ভোট চুরির প্রমাণ হিসেবে একটি ‘হাইড্রোজেন বোমা’ প্রকাশ করবে। তার দাবি, এই তথ্য সামনে এলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘দেশের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না।’
বিহারের পাটনায় ভোটাধিকার যাত্রার সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল অভিযোগ তোলেন, মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন ও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল আসনে ভোট চুরি হয়েছে। তিনি বলেন, তার দল এরইমধ্যে প্রমাণ করেছে কীভাবে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রালের মহাদেবপুরা বিধানসভা এলাকায় ভোট চুরি সংঘটিত হয়েছে।
রাহুলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি নেতা রবি শঙ্কর প্রসাদ লোকসভার বিরোধী দলীয় নেতাকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘ভেতরে বা বাইরে যেখানেই রাহুল গান্ধীর কথা শুনি না কেন, বোঝার জন্য সময় লাগে উনি আসলে কী বলতে চাইছেন... পরমাণু বোমা আর হাইড্রোজেন বোমার সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক কোথায়? বিরোধী দলনেতা হিসেবে নিজেকে কেন ছোট করছেন?’
এর আগে গত ৭ আগস্ট রাহুল বলেছিলেন, তার দল ছয় মাস ধরে মহাদেবপুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা পরীক্ষা করেছে। সেখানে এক লাখের বেশি অনিয়ম পাওয়া গেছে বলে দাবি করেন তিনি। তার অভিযোগ, এসব অনিয়মে নির্বাচন কমিশন বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ করেছে।
রাহুলের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ওই ভোটার তালিকায় ১১ হাজার ৯৬৫ জনের নাম ডুপ্লিকেট ছিল, ৪০ হাজার ৯ জন ভোটারের ঠিকানা ভুয়া বা অকার্যকর, ১০ হাজার ৪৫৪ জন ভোটার এক ঠিকানায় নিবন্ধিত, ৪ হাজার ১৩২ জনের ছবি অকার্যকর এবং ৩৩ হাজার ৬৯২ জন ভোটারের ক্ষেত্রে ফরমণ্ড৬ এর অপব্যবহার হয়েছে। মূলত নির্বাচন কমিশনের ফরমণ্ড৬ হলো নতুন ভোটার নিবন্ধনের আবেদনপত্র।
কংগ্রেস ও রাহুল আরও অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মহারাষ্ট্র নির্বাচনে ‘শৈল্পিক কারচুপি’ হয়েছে এবং এর মাধ্যমে জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করা হয়েছে। ওই নির্বাচনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহা বিকাশ আগাড়ি জোটকে পরাজিত করেছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট।
তবে নির্বাচন কমিশন এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। গত ১৪ আগস্ট কমিশন রাহুলের মহাদেবপুরা-সংক্রান্ত দাবি ‘ভুল ও বিভ্রান্তিকর’ বলে আখ্যা দেয়। এর আগেও, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কমিশন বলেছিল, ভোটের ফলাফল নিয়ে হতাশ রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ হাস্যকর’।