
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার ইচ্ছা একান্তই তার নিজের বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, তার ট্রাভেল ডকুমেন্ট সম্পর্কিত কোনও সমস্যা থাকলে সমাধান আমরা করবো। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারেক রহমান পাসপোর্টের আবেদন করেছেন কিনা সেটি আমার জানা নেই। তিনি যখন আসবেন তখন পাসপোর্ট বা ট্রাভেল ডকুমেন্ট যেটাই প্রয়োজন আমরা দিতে পারবো। সরকার নিজে থেকে উদ্যোগ নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে হয় সেটার প্রয়োজন নেই। তিনি যখন দেশে ফিরতে চাইবেন, আমাদের যতটুকু সহায়তা করার অবশ্যই করবো।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর জন্য সর্বশেষ চিঠি দেওয়ার পর ভারতের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়েছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, এরপর এ নিয়ে আর কোনও চিঠি দেইনি আমরা। এক দফা দেওয়া হয়েছে, যদি দেওয়া হয় আপনারা জানতে পারবেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আমাদের পক্ষ থেকে কোনও বাধা নেই। তবে এ বিষয়ে দুই পক্ষকেই এগোতে হবে। যদি কোনও বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই এগোবে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের ধরপাকড় প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মিশনের কাছ থেকে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি, দেখা যাক ফলাফল কী দাঁড়ায়। একটা বিষয় খেয়াল করে দেখুন, ধরা পড়ার সংখ্যায় অর্ধেক কিন্তু বাংলাদেশি। এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর। তাদের কেউই কিন্তু কোনও সমস্যা ছাড়া ধরা পড়েছে এমন নয়। অবশ্যই সমস্যা আছে, হয় কাগজপত্র নেই, না হলে অতিরিক্ত সময় থেকেছে। আমার মনে হয়, এটা শুধু সরকারের প্রশ্ন না, এটা সবাই মিলে ঠিক করতে হবে। বাংলাদেশের যে খারাপ অবস্থান, সেখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এটা আমাদের জন্য খুব ক্ষতিকর।
তিনি বলেন, কেউ যদি কোথাও কোনও খারাপ অবস্থায় পড়ে কিংবা ধরা পড়ে আমরা কিন্তু তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করি। এটাও দেখতে হবে, আমাদের লোকের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা এতো বেশি ঘটে কেন। এটার একটি কারণ আমি বলতে পারি, আমাদের অভিবাসন ব্যয় অত্যধিক, বেআইনিভাবে অত্যধিক। এটা আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ না করতে পারবো, এই সমস্যাগুলো থাকবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নেপাল একটি ছোট্ট দেশ। তাদের এই সমস্যা নেই। তাদের লোকজন যায় এবং ফিরে আসে। চুপচাপ কাজ করে, বেআইনি কিছু করে না। কারণ তারা কম পয়সায় যেতে পারে। তাদের যে এজেন্ট তারা শোষণ করতে পারে না। আমাদের এজেন্টরা শুধু এখানে নয়, কর্মীরা যেসব দেশে যায় সেখানেও র্যাকেট করার কারণে অনেক বেশি অর্থ খরচ করতে বাধ্য হয় কর্মীরা। এই জিনিস থেকে আমরা যতক্ষণ না বের হতে পারবো আমাদের অহরহ এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আমাদের যে পলিটিক্যাল ক্যাপিটাল তার অনেকখানি ব্যয় হয়ে যাবে তাদের এই কার্যক্রম থেকে উদ্ধারের জন্য।