
দেশের বিমান পরিবহন ও ট্রাভেল এজেন্সি খাতে স্বচ্ছতা, সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিতে দুটি খসড়া অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশের খসড়া দুটি উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরিন জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি, বাংলাদেশ বেসরকারি বিমান সংস্থা এবং ট্রাভেল এজেন্সি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের আকাশপথে যাত্রী পরিবহনের প্রায় ৮০ শতাংশই অভিবাসী কর্মী। তাই নতুন আইনে অভিবাসী কর্মীসহ সাধারণ যাত্রীদের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর মাধ্যমে ২০১৭ সালের বিদ্যমান আইনে যুগোপযোগী নানা পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথমবারের মতো ‘যাত্রী সেবা নিশ্চিতকরণ’ শব্দগুচ্ছকে আইনের দীর্ঘ শিরোনাম ও প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা, সুবিধা ও অধিকার সংরক্ষণে আইনি দায়বদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বিদেশি এয়ারলাইনগুলোর জন্য সাধারণ বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়োগকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে এবং দেশি এয়ার অপারেটরদেরও একই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। টিকিট বিক্রিতে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল টিকিট বিতরণ ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা টিকিট ব্লকিং, কৃত্রিম সংকট বা অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে। অধ্যাদেশটিতে প্রথমবারের মতো বিমান সংস্থাগুলোর ট্যারিফ দাখিল ও পর্যবেক্ষণের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, টেকসই বিমান জ্বালানি ব্যবহার ও পরিবেশবান্ধব নীতি প্রণয়নের ক্ষমতা যুক্ত করা হয়েছে।
সরকারকে ‘পবসামরিক বিমান চলাচল অর্থনৈতিক কমিশন’ গঠনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে বিমানবন্দরের ফি, চার্জ, রয়্যালটি ও ভাড়ার হার নির্ধারণ করা হবে, ফলে অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও ন্যায্য মূল্যনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।