ঢাকা বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

শিম চাষে কম খরচে লাভ বেশি

শিম চাষে কম খরচে লাভ বেশি

শিম চাষ করে সফল হয়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মাধবপুর এলাকার কৃষক দাউদ আলী। এবছর শিমের ভালো দাম পাওয়ায় বিগত ১০-১২ বছরের তুলনায় বেশি লাভবান হয়েছেন তিনি। কম খরচ করে বেশি লাভ করে বেশ খুশি তিনি। জানা যায়, ১২ বছর ধরে শিমের আবাদ করেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকার কৃষক কিতাব উদ্দিনের ছেলে দাউদ আলী। তবে এবছর বেশ কয়েকবার শিমের দামের সেঞ্চুরি পেয়ে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। তার পাশাপাশি এলাকার অনেকেই এখন শিম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। কৃষক দাউদ আলী জানান, আমি বিগত ১২ বছর ধরে শিম চাষ করি। প্রতিবছর ১ বিঘা বা দেড় বিঘা করে শিমের চাষ করি। কোনোবার লাভ হয় আবার কোনোবার লস হয়। কিন্তু এবার যে পরিমাণ লাভ হয়েছে তা আগে কোনোদিন হয়নি। ২-৩ মাস ধরে শিম বিক্রি করছি। গাছ প্রায় মরেই গিয়েছিলো বলে শিমের মাচায় করলা গাছ তোলার জন্য বীজ রোপণ করেছিলাম। কিন্তু আবার শিমে ফুল ধরা শুরু করেছে। এই জমিতে শিম চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে প্রদর্শনী দিয়ে সহযোগিতা করেছিলো। কৃষি অফিস ১০ শতাংশ জমিতে শিমের আবাদের জন্য প্রদর্শনী দিয়েছিলো। আমি তার সাথে আরো ২০ শতক বেশি করে চাষ করেছিলাম। এছাড়া পাশের মাঠে আরো ৩৩ শতক জমিতে শিমের আবাদ করেছি। এই জমিটাতে আমার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৭-৮ হাজার টাকার মতো। এরইমধ্যে আমি ৬০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করে ফেলেছি। এখনো সারাবছর শিম বিক্রি করতে পারব। তিনি আরো জানান, বিঘাপ্রতি ৮-১০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। শিমে শুধু মাচা দেয়ার খরচটায় একটু হয়। তাছাড়া তেমন খরচ হয় না। আমি শুরুতে ১০০ টাকা কেজি হিসাবে পাইকারি শিম বিক্রি করা শুরু করি, এর পর ৫০-৬০ টাকা এবং এখনো ২০-২৫ টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি করছি। এই শিম বিক্রি করেই সারা বছর সংসার চলে এখন আমার। একই এলাকার কৃষক আফাজ উদ্দিন জানান, শিম চাষ করে দাউদ আলী এবার খুবই ভালো দাম পেয়েছে। আর আমাদের এলাকায় শিম যে এত ভালো হবে তা আমরা ভাবতেও পারিনি। সপ্তাহে দুই দিন শিম তুলে বাজারে বিক্রি করে। এর কারণে সারা বছরই নগদ টাকা আসে। আগামীতে অনেকেই এই শিম চাষ করবে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, ‘শিম একটি লাভজনক ও উচ্চমূল্য সবজি। কম কময়ে আর্থিকভাবে কৃষকরা এ শিম চাষ করে লাভবান হতে পারে। আমরা কৃষকদের শিম চাষে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মিরপুর উপজেলায় আমরা যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের শিম চাষের জন্য প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী দিয়েছি। যার ফলে কৃষকরা শিম চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। মিরপুরের মাটি শিম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী এবং এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা বেশ ভালো শিমের আবাদ করেছে। সেই সঙ্গে সারা বছরই শিমের বাজার দর ভালো থাকায় বেশ লাভবান হয়েছেন তারা। যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের মনিটরিং ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা মাসুম আব্দুল্লাহ জানান, শিম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় সবজি। অত্র প্রকল্পের আওতায় আমরা কৃষকদের প্রদর্শনী এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করছি। সেই সঙ্গে কৃষকরা যাতে বাজারমূল্য ভালো পায় এজন্য বাজারজাত করণের জন্য বাজার সংযোগ করে দিচ্ছি। এর ফলে কৃষকরা শিম চাষে আরো আগ্রহী হয়ে উঠছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত