ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ গভীর রাতে রোহিঙ্গা ও ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশের ভেতরে পুশইন করছে। পুশইন ঠেকাতে ভারতকে চিঠি দিলেও কোনো কর্ণপাত করেনি দেশটি। ফলে আবারও ভারতেক চিঠি দেবে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল বিএসএফ পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বহু মানুষকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে। ভারতে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে আটকের পর তাদের বাংলাদেশে ‘পুশইন’ করছে দেশটির সীমান্তরক্ষী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যা ঠেকানো যাচ্ছে না। আর এটি পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব নয় বলেও মনে করে ঢাকা। তাই আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহার দিকে মনোযোগ সরকারের। চলতি মাসের শুরুতে দিল্লিকে এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ অবস্থায় দিল্লিকে ফের চিঠি দেওয়ার সিন্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা।
জানা গেছে, গতকাল পঞ্চগড়ে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ২৬ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এদের মধ্যে পুরুষ ৮ জন, নারী ৯ জন ও শিশু ৯। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী সীমান্ত দিয়ে ৮ জনকে পুশইন করেছে ভারতের বিএসএফ। ময়মনসিংহের ভারত সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ২২ জনকে ‘পুশইন’ করেছে বিএসএফ। বিজিবির-৩১ ব্যাটালিয়নের সিইও কামরুজ্জামান জানান, রাতে খবর পেয়ে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের থানায় হস্তান্তর করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের বিয়টি নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। সর্বশেষ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ময়মনসিংহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও পঞ্চগড় জেলার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আরও ৫৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে। গত সোমবার গভীর রাত ও মঙ্গলবার ভোরে এই তিন সীমান্ত থেকে তাদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর থেকেই অবৈধ নাগরিক হিসেবে আটকদের বাংলাদেশে পুশইন বাড়িয়েছে ভারত। দেশটির গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানে হামলা চালানোর পর ভারত এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি মানুষকে বাংলাদেশে ‘পুশইন’ (ঠেলে পাঠানো) করেছে। এ অবস্থায় ভারতকে ফের চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো ঢাকা। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ভারত থেকে পুশইন ঠেকানো সম্ভব না, আবার চিঠি দেবে বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, পুশইন নিয়ে ভারতকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে কনস্যুলার সংলাপও করতে পারে। নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকেই জানতে চায়, তখন তাদের কাছে সরকারের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয়। এসময় শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরাতে সরকারের চেষ্টার কথাও উল্লেখ করে উপদেষ্টা। বলেন, প্রয়োজন হলে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারত সরকারকে আরেক দফা চিঠি দেবে ঢাকা। ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করার কারণে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে মন্তব্য করেন তৌহিদ হোসেন। বলেন, আমাদের কোনো ক্ষতি হয়নি, বরং নির্ভরতা কমেছে।