ঢাকা সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বার্ধক্যকে বিদায়

বার্ধক্যকে বিদায়

নতুন আশার আলো জেগেছে- এখন আর আপনি বৃদ্ধ হবেন না। বার্ধক্যকে বিদায় বলবে হাইড্রোজেন ওয়াটার। কী অবিশ্বাস্য তাই না! আসলে কি হাইড্রোজেন ওয়াটার তারুণ্যের প্রতীক। সত্যি কি তাই? হাইড্রোজেন ওয়াটার অথবা হাইড্রোজেনসমৃদ্ধ পানি স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য একটি জনপ্রিয় অভ্যাস হয়ে উঠেছে। এ পানীয়টি সাধারণ পানির সঙ্গে অতিরিক্ত হাইড্রোজেন গ্যাস (ঐ?) যোগ করে তৈরি করা হয়। এই পানীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে শরীরের জন্য অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে থাকে বলে দাবি করা হচ্ছে। কারণ এটি প্রদাহ কমায়, শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে বলে দাবি করা হয়।

হাইড্রোজেন ওয়াটারে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে প্রদাহ কমিয়ে দেয় এবং অ্যান্টি-অ্যাপোপটোটিক প্রভাবের মাধ্যমে কোষের ক্ষতি রোধ করতে পারে। এছাড়া এটি মেটাবলিক সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে শর্করার মাত্রা এবং কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করতে পারে। আর এটি ত্বকের বার্ধক্য কমাতে এবং হাইড্রেশন উন্নত করতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে।

এদিকে আমেরিকার খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন হাইড্রোজেন ওয়াটারকে নিরাপদ বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে এর কার্যকারিতা সম্পর্কিত দাবিগুলো এখনও পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি। ফিটনেস উৎসাহীরা এবং স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিরা এই পানীয়টির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। হাইড্রোজেন ওয়াটার নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ক্ষেত্রে একটি আকর্ষণীয় প্রবণতা। এর সম্ভাব্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য এটিকে আশাব্যঞ্জক করে তুলেছে। স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, হাইড্রোজেন ওয়াটারকে একমাত্র সমাধান হিসেবে না দেখে সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুমের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবহার করা উচিত। তবে এই হাইড্রোজেন ওয়াটার কি সত্যিই একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন, নাকি এটি কেবল আরেকটি স্বাস্থ্য ফ্যাশন? সম্প্রতি এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করেছেন গবেষণা এবং বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কি বলছেন, তা জেনে নিই।

হাইড্রোজেন ওয়াটার হলো সাধারণ পানি (ঐ?ঙ), যাতে উচ্চচাপের মাধ্যমে অতিরিক্ত হাইড্রোজেন গ্যাস মিশ্রিত করা হয়। এটি হচ্ছে ইলেক্ট্রোলাইসিস, হাইড্রোজেন ট্যাবলেট বা বিশেষ ডিভাইসের মাধ্যমে তৈরি করা যায়। এ পানির প্রধান আকর্ষণ হলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, যা ফ্রি র‌্যাডিক্যাল নামক ক্ষতিকর অণুগুলোকে বিনষ্ট করতে সাহায্য করে। ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে, যা হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং বার্ধক্যের মতো সমস্যার জন্য দায়ী। হাইড্রোজেন ওয়াটার নিয়ে সারা বিশ্বে বিভিন্ন গবেষণায় সম্ভাব্য স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ২০২০ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে- ১.৫ লিটার হাইড্রোজেন ওয়াটার দৈনিক পান করলে ৩০ বছরের বেশি বয়সি ব্যক্তিদের মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং প্রদাহ কমে। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে- লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে রেডিয়েশন থেরাপির সময় ছয় সপ্তাহ ধরে হাইড্রোজেন ওয়াটার পান করলে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। আবার অন্য আরেকটি গবেষণা থেকে জানা গেছে, এটি অ্যাথলেটদের শারীরিক কর্মক্ষমতা বাড়াতে এবং ব্যায়ামের পর পেশির ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে এ গবেষণাগুলো বেশিরভাগই ছোট আকারের এবং দীর্ঘমেয়াদি ফলের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা করা হয়নি। আবার বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, হাইড্রোজেন ওয়াটারের কোনো উল্লেখযোগ্য প্রভাব পাওয়া যায়নি। যেমন প্যানিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত