
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের অংশ হিসেবে গাজা অভিমুখী কনশেনস জাহাজটি আগামীকাল বুধবার ভোর নাগাদ ‘রেড জোন’ তথা বিপজ্জনক অঞ্চলে পৌঁছে যেতে পারে। দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এমন তথ্য জানিয়েছেন। শহিদুল আলম নিজেও কনশেনস জাহাজে আছেন। রেড জোন বলতে শহিদুল আলম মূলত সেই বিপজ্জনক অঞ্চলকে বুঝিয়েছেন, যেখানে ইসরায়েলি সেনারা সম্প্রতি সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরকে আটকে অধিকারকর্মীদের আটক করেছেন।
শহিদুল আলম কনশেনস নামের যে জাহাজে আছেন, তা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) অংশ। এর আগে এএফসির সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের নৌযানগুলোও ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে গাজায় ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তবে সেগুলো ইসরায়েলি সেনারা দখল করে ফেলে।
ফেসবুক পোস্টে শহিদুল আলম লিখেছেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছি। কারণ ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস’ নৌবহরে থাকা ছোট ও ধীরগতির নৌযানগুলো যেন পেছনে পড়ে না যায়, তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এসব জাহাজও এফএফসির (ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন} অংশ। তবে আমরা সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের চেয়ে অনেক দ্রুত এগিয়েছি। ওই নৌবহর প্রচণ্ড বাতাস ও ঝড়ের কারণে সাময়িকভাবে থেমে গিয়েছিল।’
শহিদুল আলম লিখেছেন, ‘ধীরগতির নৌযানগুলো (থাউজেন্ড ম্যাডলিনস) এখন আমাদের সমকাতারে এসেছে। আমরা এখন ‘রেড জোন’ থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে আছি। এটি সেই অঞ্চল যেখানে আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী অবৈধভাবে ফ্লোটিলার নৌযানগুলোকে আটক করেছিল।’
গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলা এবং এর জবাবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি। ফেসবুক পোস্টে সে বিষয়টিরও উল্লেখ করেছেন শহিদুল আলম।
বাংলাদেশি এই আলোকচিত্রী লিখেছেন, ‘৭ অক্টোবর ২০২৫-এর সকাল আজ। এদিন হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলের ওপর হামলা চালায়, যাতে ১ হাজার ১৯৫ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিক নিহত হন। এর মধ্যে ৮১৫ জনসাধারণ মানুষ। ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্তি দিতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল।’
গতকাল ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলা এবং এর জবাবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি। ফেসবুক পোস্টে সে বিষয়টিরও উল্লেখ করেছেন শহিদুল আলম।
শহিদুল আলম আরও লেখেন, জবাবে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি মানুষ।
এই বাংলাদেশি লিখেছেন, দ্য ল্যানসেটের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জুন নাগাদ আঘাতের কারণে মৃত্যু হওয়া মানুষের সংখ্যাটা কম করে হিসাব করা হয়েছে। ‘পরোক্ষ’ কারণে মৃত্যু হওয়া মানুষের হিসাব করলে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
শহিদুল আলম কনশেনস নামের যে জাহাজটিতে আছেন, তা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) অংশ। এর আগে এএফসির সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের নৌযানগুলোও ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে গাজায় ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তবে সেগুলো ইসরায়েলি সেনারা দখল করে নেয়।
সে প্রসঙ্গ টেনে শহিদুল লিখেছেন, ‘তবুও আমরা এগোচ্ছি। কনশেনস জাহাজে মূলত সাংবাদিক ও চিকিৎসকেরা আছেন। তাঁরা সেই দুই পেশাজীবী যাঁদের ইসরায়েল সুনির্দিষ্টভাবে নিশানা করে হত্যা করছে।’ কনশেনস হলো আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) এবং থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি) নৌবহরের একটি জাহাজ। ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গাজা অভিমুখে রওনা হয়েছে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ও চিকিৎসাকর্মীবাহী এই জাহাজ। দুই বছর ধরে ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে।