
আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনি ইশতেহারে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) বিষয়ে সুস্পষ্ট অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানীতে আয়োজিত এক সংলাপে এ আহ্বান জানানো হয়। পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি-সংশ্লিষ্ট ১০টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্ম ‘নেটওয়ার্ক অব ওয়াশ নেটওয়ার্কস’ এ সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত একটি মৌলিক উন্নয়ন অগ্রাধিকার হিসেবে ওয়াশের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। নেটওয়ার্ক অব ওয়াশ নেটওয়ার্কসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সংলাপে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি, নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি বিশেষজ্ঞ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ছিল- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণঅধিকার পরিষদ এবং আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। আয়োজক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং দেশের মানুষের জীবন ও মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে নির্বাচনি ইশতেহারে শক্তিশালী ও কার্যকর ওয়াশ অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়। সংলাপে উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধিবিষয়ক উপস্থাপনার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন এবং নিজেদের নির্বাচনি ইশতেহারে তার প্রতিফলনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সংলাপে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সিপিবির আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, ঢাকা-১৭ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী এসএম খালিদুজ্জামান, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাবিদ নওরোজ শাহ প্রমুখ।
সংলাপে ওয়াশ খাতে পৃথক জাতীয় বাজেট বরাদ্দ, ঋতুস্রাবকালীন স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত (এমএইচএম) স্পষ্ট নীতিমালা ও বিধিমালা প্রণয়ন, জাতীয় অর্থায়ন কাঠামোর মধ্যে ওয়াশকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ওয়াশ সেবার জন্য টেকসই অর্থনৈতিক মডেল উন্নয়নের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি জলবায়ু-সহনশীল ওয়াশ অবকাঠামোতে বিনিয়োগ, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও গবেষণা এবং কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা উদ্যোগে ওয়াশ উপাদান অন্তর্ভুক্ত করার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- ওয়াটারএইড বাংলাদেশের পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি লিড ফাইয়াজউদ্দিন আহমদ। ওয়াটারএইড বাংলাদেশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই সংলাপের আয়োজক নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টেগ্রিটি নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ওয়ার্কস অ্যাসোসিয়েশন, ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যালায়েন্স, কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর, ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়া বাংলাদেশ অ্যান্ড ওয়াটার পভার্টি, ফ্রেশওয়াটার অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়া বাংলাদেশ, ফিক্যাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট নেটওয়ার্ক, ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, মেনস্ট্রুয়াল হেলথ অ্যান্ড হাইজিন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম, সাসটেইনেবল স্যানিটেশন অ্যালায়েন্স এবং স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল।